রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: সিসিটিভি ক্যামেরা মেরামতির জন্যে মেয়র পারিষদদের বৈঠকে টাকা বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। টেন্ডার ডেকে এজেন্সিকে দিয়ে কাজ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফিল্ড সার্ভে করতে গিয়ে দেখা গেল আদতে কোনও ক্যামেরাই নেই ওয়ার্ডে!
এমন অবাক করা ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। অভিযোগ, বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণের কথা বলে ৬৪টি ভূতুড়ে ক্যামেরার জন্যে টাকা বরাদ্দ করেছিল শিলিগুড়ি পুরনিগমের তৃণমূল বোর্ড। কিন্তু বিরোধী দলনেতা, তথা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অমিত জৈনের দাবি, এমন কোনও ক্যামেরাই নেই তাঁর ওয়ার্ডে।
বিষয়টি জানিয়ে গত জানুয়ারি মাসের বোর্ড সভায় প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। এরপর তদন্ত হবে বলে জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেয়র পারিষদ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই তদন্ত হয়নি বলে অভিযোগ অমিতের। বিরোধীদের বক্তব্য, টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। পুরনিগমের বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, ‘আমি প্রথম প্রতিবাদ করেছিলাম। আমাকে বলেছিল, তদন্ত হবে। কিন্তু কোনও খোঁজ নেই। বলেছে ৩১টি ক্যামেরা আগের কাউন্সিলারের ব্যক্তিগত উদ্যোগে লাগানো হয়েছিল। সেটার টাকা কেন দেবে পুরনিগম?’ আর ৩১টি ক্যামেরা হলে ৬৪টি ক্যামেরার টাকা কী করে বরাদ্দ হল? এই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
যদিও সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেয়র পারিষদ কমল আগরওয়ালের বক্তব্য, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি কোনও টাকা পেমেন্ট করা হয়নি। সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে সেখানে কোনও ক্যামেরা নেই। তাই আমরা আর টাকা বরাদ্দ করিনি।’
শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৬৪টি ক্যামেরার বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে ২ লক্ষ ৩০ হাজার ১০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ২০২২ সালে এই টাকা বরাদ্দ হয় বলে খবর। কিন্তু এজেন্সি কাজ করতে গেলে দেখা যায়, সেখানে কোনও ক্যামেরা নেই। স্থানীয় কাউন্সিলার খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আগের কাউন্সিলার তৃণমূলের প্রদীপ গোয়েল ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৩১টি ক্যামেরা বসিয়েছিলেন। সেগুলির একেকটি ডিভিআর একেকটি বাড়িতে তালাবন্ধ করে রাখা রয়েছে। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কারও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বসানো ক্যামেরা কেন মেরামত করবে পুরনিগম এবং ৬৪টি ক্যামেরার জন্যে কী করে টাকা বরাদ্দ হয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। এরপরেই পুরনিগমের বরাদ্দ টাকা আটকানো হয়।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কী করে ফিল্ড সার্ভে না করেই এত টাকা বরাদ্দ করে দেওয়া হল। বিরোধীরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে না দিলে কী এই কাজ আটকানো হত, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।