মোস্তাক মোরশেদ হোসেন ও শান্ত বর্মন, রাঙ্গালিবাজনা ও জটেশ্বর: ফেসবুকে প্রথম দেখা দুই তরুণীর। মেসেঞ্জারে পরিচয়। পরিচিতি গড়ায় গাঢ় বন্ধুত্বে। শুরু হয় ভিডিও কলিংয়ে কথা। দুজন দুজনকে না দেখে নাকি থাকতেই পারতেন না। ২৬ জানুয়ারি হাতে হাত ধরে এলাকা ছাড়েন দুজনে। বয়স সবে ২০ বছর পেরিয়েছে। আর এতেই মাথায় হাত অভিভাবকদের। নিছক সাদামাঠা বন্ধুত্বের চেয়েও ওদের দুজনের সম্পর্কে যে বাড়তি মাত্রা রয়েছে, তা মানছেন অভিভাবকরাও। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে একটি পরিবার। এদিকে, ওই দুই তরুণীর মোবাইল ফোনের সুইচ বন্ধ থাকায় কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করা যায়নি।
একজনের বাড়ি আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) ফালাকাটার ডালিমপুরে। তাঁর লেখাপড়া উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত। আরেকজনের বাড়ি মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের সূত্রধরপাড়ায়। স্নাতক স্তরে ২য় বর্ষের পর পড়াশোনার পাট চুকিয়েছেন তিনি। গত সপ্তাহেই মালদায় একে অপরকে বিয়ে করেছেন দুই সমকামী তরুণী। এক্ষেত্রেও কি সেরকমই কোনও ঘটনা? ডালিমপুরের তরুণীর পরিবার সাফ জানিয়েছে, তাঁরা এধরনের সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নেবেন না। এদিকে সূত্রধরপাড়ার তরুণীর দাদার বক্তব্য, ‘প্রেম নয়। ওদের মধ্যে ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে। ওরা একইসঙ্গে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়।’ তবে কেন দুজনে একসঙ্গে গা-ঢাকা দিলেন সেটাই বুঝতে পারছেন না তিনিও।
প্রথমে ফালাকাটা থানায় মিসিং ডায়ারি করে ডালিমপুরের ওই পরিবার। সোমবার মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের তরুণী এবং তাঁর দাদার বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছেন মেয়েটির দাদা। ফালাকাটা থানার আইসি সমিত তালুকদার বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’
তবে দুজনের একসঙ্গে এলাকা ছাড়ার পেছনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উদ্দেশ্যের তত্ত্ব মানতে নারাজ ডালিমপুরের পরিবারটি। ওই তরুণীর দাদার বক্তব্য, ‘আমার বোনকে অন্য উদ্দেশ্যের জালে ফাঁসিয়েছে ওই মেয়েটি। সে আমাদের বাড়িতেও এসেছিল। তখন সে জানিয়েছিল, ওদের বাড়ি জটেশ্বরে। এখন বুঝতে পারছি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সে মিথ্যে কথা বলেছিল।’ তাঁর উদ্বেগ, ‘আমার বোন কোথায় আছে, কীভাবে আছে জানি না। সময় যত গড়াচ্ছে দুশ্চিন্তা তত বাড়ছে। সম্ভবত আমার বোনকে অপহরণ করা হয়েছে। ওই মেয়েটি এর আগে অন্য আরেকটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল বলে জানতে পেরেছি।’
এদিকে সূত্রধরপাড়ার তরুণীর দাদা সোমবার বলেন, ‘আমার বোন আদৌ কাউকে অপহরণ করেনি। রবিবার আমার বোন ফোন করে জানিয়েছে, ওরা একসঙ্গে রয়েছে। তবে কোথায় রয়েছে, তা বলেনি।’ তিনিও মাদারিহাট থানায় মিসিং ডায়ারি করেছেন।