গাজোল: কামরাঙ্গা খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে জনবিরল এলাকায় নিয়ে গিয়ে দুই নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল মালদার গাজোলে। রবিবার ঘটনাটি ঘটলেও দুই নাবালিকা সোমবার বিষয়টি পরিবারকে জানায়। সেদিন রাতেই দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে শুধুমাত্র মলম দিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দুই নির্যাতিতাকে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবারের লোকেরা। এরপর তাদের মালদা মেডিকেলে রেফার করা হয়। এরপর নির্যাতিতাদের পরিবারের তরফে গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে গাজোল থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে দুই নাবালিকাকে কামরাঙ্গা খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এলাকারই দুই নাবালক। এরপর সেখানে তাদের ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। বাড়িতে ঘটনাটি জানালে তাদের খুনেরও হুমকি দেওয়া হয়। ভয়ে প্রথমে বাড়িতে কিছুই জানায়নি ওই দুই নাবালিকার। পরে অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে সোমবার তাদের মায়েদের কাছে ঘটনার কথা জানায় তারা। এরপর সোমবার রাতেই তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানে তাদের ঠিকমতো চিকিৎসা করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকি মেডিকেল টেস্টও করা হয়নি। মঙ্গলবার সকালে তারা আবার যায় হাসপাতালে। সেখান থেকে তাদের মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। বর্তমানে তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্তে নেমে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেপ্তার করে গাজোল থানার পুলিশ। সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে এদিন ধৃতদের জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নারী নির্যাতন নিয়ে একদিকে যখন মণিপুর জ্বলছে তখন এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় জেলায়। ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, তিনজন নির্যাতিতা মালদা মেডিকেলে ভর্তি রয়েছে। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি কোনও ভূমিকা পালন করেনি। কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়ান স্টপ সেন্টারে বিষয়টি জানান পরিবারের লোকেরা। এরপর সেখান থেকে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নির্যাতিতা নাবালিকাদের মেডিকেল টেস্ট করা হয়নি। এক্ষেত্রে পুলিশের গাফিলতি রয়েছে। কেননা পুলিশ রিপোর্ট না পাঠানো পর্যন্ত ডাক্তার মেডিকেল টেস্ট করতে পারে না। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি। খবর পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতালে যান সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির জেলা সম্পাদক রুনু কুণ্ডু। তাঁর বক্তব্য, ‘এ কোন রাজ্যে আমরা বাস করছি? এখানকার মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। অথচ দিনের পর দিন রাজ্যে ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব না দেখিয়ে উলটে ধর্ষিতাদের রেট ঠিক করছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। তাই নির্যাতিতারা এখানে সুবিচার পান না। পুলিশও অভিযোগ নিতে গড়িমসি করছে। ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’