নাগরাকাটা: প্রবল বৃষ্টিতে ভাসল ডুয়ার্স-তরাইয়ের দুই চা বাগান মেচপাড়াও গয়াগঙ্গা। রবিবার রাত থেকে ভুটান থেকে নেমে আসা পানা নদী দিক বদল করে কালচিনি ব্লকের মেচপাড়ার ভেতরে ঢুকে পড়ে। জলমগ্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সেখানকার নয় ও দুই নম্বর শ্রমিক মহল্লায়। বাগানের বিস্তীর্ণ চা আবাদি এলাকায় এখন জল জমে আছে। নদীর মতিগতি দেখে আতঙ্কে রয়েছে লাগোয়া চুয়াপাড়া চা বাগানও।
মেচপাড়ার ম্যানেজার অ্যাপোলো সরকার বলেন, ‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। গত বছরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠা পানার করাল গ্রাসে বাগানের বহু আবাদি এলাকা নদী গর্ভে চলে যায়। এবারও সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যে সেকশনের ধার দিয়ে নদী বইছে সেখানে একটি গার্ডওয়াল তৈরি করা হয়েছিল। সেটা উড়িয়ে দিয়ে পানা বাগানের ভেতর ঢুকে পড়েছে।’
অন্যদিকে, গয়াগঙ্গার ১৫-এ, ১৬-এ এবং ২০ নম্বর সেকশনে যাওয়ার রাস্তার ওপর অবস্থিত ৩টি কালভার্ট জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। ফলে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে তৈরি করে দেওয়া ওই পথ দিয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ম্যানেজার জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কারণেই এই পরিস্থিতি।’
চা মহল সূত্রের খবর, মেচ পাড়াকে নদীর হাত থেকে বাঁচাতে সেচ দপ্তরের তরফে আগে একটি বাঁধ তৈরি করে দেওয়া হলেও সেটার পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত করুণ। ফি বছরের নদী ভাঙনে জেরবার বাগান পরিচালকরা পরিস্থিতির কথা আগেই প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন। পাশের চুয়াপাড়া চা বাগানের গল্ফ কোর্স ও পুরোনো একটি এয়ারফিল্ড আগেই নদী গর্ভে চলে গেছে। এদিকে বিরবিটি নদীর আগ্রাসনের মুখে আতঙ্কে রয়েছে রহিমপুর চা বাগান। দিন কয়েক আগে ওই বাগানটিও প্রচুর ক্ষতির মুখে পড়ে। ভুটান থেকে নেমে আসা নদী ও সেই সঙ্গে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা বিভিন্ন ঝোড়ার কারনে ত্রস্ত হয়ে রয়েছে গারগান্ডা, তুলসীপাড়া, ধূমচিপাড়ার মতো একাধিক বাগান।
চা মালিকদের একটি সংগঠন আইটিপিএ-র ডুয়ার্স শাখার সম্পাদক রাম অবতার শর্মা বলেন, ‘চা শিল্পের অবস্থা এমনিতেই সংকটজনক। তার ওপর বর্ষার এই ক্ষতি পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।’