নাগরাকাটা: শহরের স্কুলকে পেছনে ফেলে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া আয়োজিত আর্থিক সাক্ষরতা (ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি) ও ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত হতে চলা জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ওপর জেলাস্তরের প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতায় জলপাইগুড়িতে চ্যাম্পিয়নের খেতাব জিতে নিল তস্য চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের দুই আদিবাসী পড়ুয়া। তাঁরা নাগরাকাটার চ্যাংমারি টিই হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রী। গত বুধবার সমগ্র শিক্ষা মিশনের জেলা শাখার বিদ্যাসাগর হলে ওই প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই চ্যাংমারি চা বাগানের হাইস্কুলটির দশম শ্রেণির দুই পড়ুয়া বিশেষ ওরাওঁ ও মণিকা রজকের টিম সেরার পুরস্কার পায়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করে যথাক্রমে বেরুবাড়ি ফ্রি তপশিলী হাইস্কুলের নবম শ্রেণির দুই পড়ুয়া দেব রায় ও বর্ষা রায় এবং পূর্ব বাতাবাড়ি চন্দ্রমোহন হাইস্কুলের নবম শ্রেণির রৌণক ইসলাম ও বেবি পারভিনের টিম। চ্যাম্পিয়ন মণিকা ও বিশেষ এবারে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় জলপাইগুড়ি জেলার প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেওয়ার জন্য কলকাতায় যাবে। ওই প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে ১৪ জুলাই। দুই পড়ুয়ার সাফল্যে এখন খুশির হাওয়া চ্যাংমারি টিই হাইস্কুলে।
প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতাটি নিজেই পরিচালনা করেন সমগ্র শিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক (ডিপিও) লেন্ডুপ সোদেন শেরপা। তিনি বলেন, ‘আর্থিক ব্যবস্থার নানা খুঁটিনাটি দিক নিয়ে প্রশ্নোত্তরের এই আসরটি ছাত্রছাত্রীদের নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছে। অংশগ্রহনকারী প্রত্যেকের প্রতি আমাদের শুভেচ্ছা রইল।‘ সংশ্লিষ্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত ১৯ জুন প্রথমে অনলাইন মোডে ব্লক স্তরের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে জলপাইগুড়ি জেলা এবং শিলিগুড়ি পুর কর্পোরেশন-এর সংযোজিত এলাকা মিলিয়ে মোট ৫৪টি স্কুল অংশ নেয়। জেলার ৭টি ব্লক থেকে ৬টি করে স্কুল এবং ৩টি পুরসভা এলাকা থেকে ২টি করে স্কুলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। জলপাইগুড়ির অন্তর্গত শিলিগুড়ি পুর কর্পোরেশন এলাকা থেকে অংশ নেয় ৬টি স্কুল। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত স্কুলগুলির দুজনের একটি করে দল প্রতিযোগিতায় ছিল। ব্লক ও পুরসভা স্তরের চ্যাম্পিয়ান ৯টি স্কুলকে নিয়ে এদিন জেলাস্তরের প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে লিখিত পরীক্ষার পর ৬টি স্কুল ফাইনাল রাউন্ডে ওঠে।
প্রতিযোগিতায় সফলদের হাতে সংশাপত্র তুলে দেন রিজার্ভ ব্যাংকের অ্যাসিন্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার দেবজ্যোতি দত্ত। পরবর্তীতে তাঁদের আর্থিক পুরস্কারও দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। উপস্থিত ছিলেন সমগ্র শিক্ষা মিশনের সহ প্রকল্প আধিকারিক (এডিপিও) রাজীব চক্রবর্তী। মিশনের জলপাইগুড়ির পেডাগোজি কো-অর্ডিনেটর রাজা দত্ত বলেন, ‘চা বাগানের চ্যাম্পিয়ান স্কুলটির পারফরম্যান্স এককথায় অনবদ্য ছিল। চ্যাংমারি টিই হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কুমার ছেত্রী বলেন, ‘চা বাগানের দুই শ্রমিক পরিবারের ছাত্রছাত্রীর জন্য আমরা গর্বিত। ওঁদেরকে কুর্ণিশ জানাই।‘