রায়গঞ্জ: গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার। এদিকে ফলাফল প্রকাশিত হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। রায়গঞ্জের জেলা পরিষদের ৩টি আসন তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে যেতেই সাংসদ বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার ও সহ সভাপতি নিমাই কবিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ডিসিআরসি’তে বিডিও শুভজিৎ মণ্ডলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বলে অভিযোগ।
তৃণমূল প্রার্থীদের জেতাতে বিডিও’র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দেবশ্রী। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁদের জয়ী প্রার্থীদের সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে না। যাঁরা জয়ী হয়েছেন তাঁদের ব্যালটগুলি বারবার রিকাউন্টিংয়ের নির্দেশ দিয়ে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে সব তৃণমূল প্রার্থী হেরে গিয়েছেন তাঁদের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। বিডিওকে ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। সাংসদ বলেন, ‘জেলার প্রতিটি ব্লকে ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। করণদিঘিতে একজন বিধায়ক গণনাকেন্দ্রের ভেতরে সারাক্ষণ থেকে বিজেপি কর্মীদের হুমকি দিয়েছেন। এভাবে চলতে পারে না। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই।’ যদিও এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক সঞ্জয় মিত্র বলেন, ‘ভোট গণনাকেন্দ্রে কিভাবে একজন সাংসদ বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকের উপর আঘাত হানলেন, বুঝতে পারছি না। আমরা সাংসদ ও বিজেপির নেতাদের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা করছি।’
জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘সাংসদের দাবির সঙ্গে আমরাও একমত। ভোট নিয়ে লুটপাট চলল। সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। যাঁরা জমি বাড়ি বন্ধক রেখে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁদের এভাবে হারিয়ে দেওয়া ঠিক হল কি?’। এদিন ঘটনার পর অসুস্থ বোধ করেন বিডিও। তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। বিডিও বলেন, ‘কিছু বোঝার আগেই ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়েন সবাই। যেভাবে চেয়ার ও টেবিল নিয়ে আমার ওপর আক্রমণ করতে এসেছিল স্টাফরা না থাকলে বড় কিছু ঘটত।’
প্রসঙ্গত, গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ সর্বত্র আধিপত্য বজায় রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল একাই পেয়েছে ৬৪টি। বিজেপি পেয়েছে ৯টি এবং ২৫টি ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে। জেলার ৯টি পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে গিয়েছে। ২৬টি জেলা পরিষদের আসনের মধ্যে ২৩টি গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে।