শিলিগুড়িঃ প্রকাশ্য রাস্তায় দুই পক্ষের মধ্যে স্ট্যাম্প (Stamp), হকি স্টিক (Hockey stick) নিয়ে মারপিট। ওই মারপিটের (Violence) মধ্যেই ছুরিকাহত হলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব নেতা হিসেবে পরিচিত বিজয় সাহানী। রবিবার রাতে ওয়ার্ডের গঙ্গানগর পার্ক এলাকায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিজয়কে প্রথমে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হলেও পরে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (North Bengal Medical College) ভর্তি করা হয়েছে। বিজয়ের অভিযোগ, এলাকারই যুবক আকাশ মাহাতো তাঁকে ছুরিকাহত করেছে। আকাশের খোঁজে এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে খালপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ। যদিও ঘটনার পর থেকেই বিজয়কে তৃণমূলের কর্মী বলে অস্বীকার করেছে স্থানীয় নেতৃত্ব। তৃণমূল ওয়ার্ড কমিটির সদস্য বিকাশ তিওয়ারির বক্তব্য, ‘ও আগে ওয়ার্ডের মিটিংয়ে আসত। তবে সম্প্রতি তাঁকে কোনও অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। কেউ নিজেকে তৃণমূল বললেই তৃণমূল হওয়া যায় না।’
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে ঝামেলার সুত্রপাত। বিজয়ের বন্ধু গঙ্গানগরের বাসিন্দা প্রশান্ত সিং-এর অভিযোগ, ‘এলাকার এক সিনিয়রের সঙ্গে গল্প করছিলাম। সেখানে এলাকারই এক বাসিন্দা হরি হঠাৎ করে পড়ে যায়। সে মদ্যপ অবস্থাতেই ছিল।’ পড়ে যাওয়া নিয়েই তর্কাতর্কি হয়। এরপর এদিন রাতের দিকে হঠাৎই প্রশান্তের কাছে খবর আসে, তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলেছে আকাশ মাহাতো ও তাঁর দলবল। প্রশান্তের সঙ্গে তখন বিজয় ও তাঁর দলবল-ও ছিল।
এদিকে, গঙ্গানগর পার্কের সামনে হাজির হতেই মারপিট শুরু হয় বিজয় ও প্রশান্তের মধ্যে। অভিযোগ, আকাশের দলবল হকি স্টিক, স্ট্যাম্পও সঙ্গে নিয়ে এসেছিল। সেটা দিয়েই চলে মারপিট। বিজয়ের অবশ্য দাবি, ‘আমি আকাশ ও তাঁর দলবলকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছিলাম। এমন সময়ই আকাশ পেছন দিয়ে আমার পিঠে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। এরপরই ওঁরা চলে যায়।’ এদিকে, রক্ত বের হতে থাকায় বিজয়ের দলবল বিজয়কে প্রথমে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক জানান, ছুরি দিয়েই বিজয়ের পিঠে আঘাত করা হয়েছে। এরপর বিজয়কে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, আকাশ মাহাতোর বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিজয়ের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সময় অবৈধ কাজের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, প্রকাশ্য রাস্তায় এধরণের ঘটনায় এলাকাবাসিদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এলাকার আইন শৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলার বিজেপি-র অনিতা মাহাতোর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। বিজয়ের বক্তব্য, ‘আমি এখন বাইরে রয়েছি। সোমবার এলাকায় পৌঁছে পুরো ঘটনা শুনব।’