সানি সরকার, শিলিগুড়ি: গত কয়েকদিন টানা বৃষ্টিতে তাপমাত্রার পারদ অনেকটাই নেমেছে উত্তরবঙ্গে। অনেকেরই মনে হয়েছিল, আর বোধহয় সেই তীব্র গরমের মুখোমুখি হতে হবে না এই মরশুমে। কিন্তু বিহারের ওপর থেকে ঘূর্ণাবর্ত উত্তরপ্রদেশে পাড়ি দিতেই মেঘ উধাও উত্তরবঙ্গের আকাশ থেকে। আবহাওয়ার যা গতিপ্রকৃতি তাতে বুধবার থেকে ফের পারদ ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে জানালেন আবহাওয়াবিদরা। উষ্ণতম দিন হিসেবে সেপ্টেম্বরের অতীত রেকর্ড শুক্রবার ভেঙে যেতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। একইসঙ্গে নতুন করে বৃষ্টির সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
আবহাওযা দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহার বক্তব্য, বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টির জেরে কোথাও কোথাও এক পশলা বৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু বুধবার থেকে তাপমাত্রা বাড়বে। যা চলবে সোমবার পর্যন্ত। ওইদিন সন্ধ্যার পর থেকে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাতের দিকে বৃষ্টি হতে পারে।
বিহারের ওপর অবস্থানকালীন বঙ্গোপসাগর থেকে এই অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমাণ জলীয় বাষ্প টেনে এনেছিল ঘূর্ণাবর্তটি। শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। ফলে নতুন করে টানা কয়েকদিন অবিরাম বৃষ্টি হয় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। শরতে বর্ষার ছবিটা ফিরে এসেছিল। চলতি বছর প্রথমবার শনিবার রাতে মালদা এবং কাটিহার ডিভিশনে রেল ট্র্যাকের ওপর জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গগামী প্রত্যেকটি ট্রেনই রবিবার দেরিতে পৌঁছছায় গন্তব্যে। এমনকি শিলিগুড়িতো বটেই, উত্তরবঙ্গের বাকি জেলা শহরগুলির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে যায় ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে। ফলে কিছুটা হলেও শীতের আমেজ অনুভত হয় সর্বত্র।
এমন আবহাওয়ায় পুজোর দিনগুলিতে গরম পোশাক পড়তে হবে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যায় শিলিগুড়ি থেকে রাযগঞ্জ, জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহার সর্বত্রই। কিন্তু বৃষ্টি থামতেই সোমবার থেকে আবহাওযার পরিবর্তন হতে থাকে। মঙ্গলবার কিছুটা হলেও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এদিন সকালে অল্প সময়ের জন্য হলেও সমতল শিলিগুড়ি থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন হয়। মেঘমুক্ত আকাশের জন্য ঘুমন্ত বুদ্ধর জেগে ওঠা স্পষ্ট বোঝা যায়।
এই মেঘ মুক্তির জন্যই বুধবার থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কথা বলছেন আবহাওয়াবিদরা। বুধবার শিলিগুড়ির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিযাসের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আদ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে। শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঠেকতে পারে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বাভাবিকভাবে অস্বাভাবিক গরম পড়লে হিমালয় সংলগ্ন উত্তরবঙ্গে বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি হয়ে বৃষ্টি পড়ে। ফলে আগামী কয়েকদিন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। তাতে সাময়িক স্বস্তি মিললেও তাপমাত্রার তেমন হেরফের হবে না।