ফালাকাটা: কয়েক মাস পরপর ফালাকাটা শহরে হাতি(Elephant) ঢুকে পড়ছে। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার হাতির তাণ্ডব চলছে শহরে। তবে এখনও পর্যন্ত মারাত্মক তেমন ক্ষয়ক্ষতির খবর না পাওয়া গেলেও হাতির তাণ্ডব নিয়ে আতঙ্কিত নাগরিকরা। তবে কী কারণে ফালাকাটা শহরে বারবার হাতির তাণ্ডব চলছে তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। আতঙ্কিত নাগরিকরা শহরে হাতি আসার জন্য দায়ী করছেন বন দপ্তরকেই। তবে বন দপ্তর(Forest Department) অবশ্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে বলে দাবি করেছে।
জলদাপাড়া সাউথ রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার রাজীব চক্রবর্তী বলেন, ‘অনেক সময় দলছুট হলে হাতি অন্যত্র চলে যায়। তবে শহর এলাকায় যাতে হাতি না ঢোকে তার জন্য সবসময় পদক্ষেপ করতে থাকি।’
একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ফালাকাটায় ২০১৬-’১৭ সালে একেবারে শহরে চলে এসেছিল হাতি। সেইবার সারদান্দপল্লি, অরবিন্দপাড়া দিয়ে হাতির পাল তাণ্ডব চালিয়েছিল। এমনকি ২০১৯ সালে ফের শহরে হাতি আসে। ওই সময় ৩১ মে ভোর থেকে শুরু করে দিনভর জলদাপাড়া বনাঞ্চলের এক বুনো হাতি তাণ্ডব চালায় ফালাকাটা শহরে। সুভাষপল্লি ও মাদারি রোডেও হামলা চালায় হাতিটি। একইভাবে ওই বছর ২৯ অক্টোবর মাঝরাতে শহরের একাধিক রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ায় বুনো হাতি। সেবার ট্রাফিক পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে হাতির চলাফেরার দৃশ্য। এদিকে ২০২৩ সালে নভেম্বর মাসেও হাতি তাণ্ডব চালায় ফালাকাটায়। তবে সেবার শহরে সেরকম ক্ষতি করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার ফের হাতির দেখা পেলেন শহরবাসী। বন দপ্তর সজাগ থাকায় তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি। যদিও আতঙ্কে রয়েছে শিশু সদন ও রেমন্ড মেমোরিয়াল স্কুলের আবাসিকরা।
তবে জঙ্গল ছেড়ে হাতি শহরে আসছে কেন? ফালাকাটার পরিবেশপ্রেমী ডঃ প্রবীর রায় চৌধুরীর মত, ‘ফালাকাটার আশপাশে জলদাপাড়া বনাঞ্চল রয়েছে। কিন্তু এই বনাঞ্চল ক্রমশ ফাঁকা হচ্ছে। বুনোদের খাদ্যভাণ্ডারে টান পড়ছে। পাশাপাশি হাতির করিডরে তৈরি হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতা। এসবের জেরে খাবারের সন্ধান কিংবা করিডরে দিগভ্রষ্ট হয়েই হাতির দল শহরে ঢুকছে।’
ভূগোলের শিক্ষক হীরেন্দ্রনাথ সূত্রধর বলেন, ‘ভৌগোলিক দিক থেকে ডুয়ার্সের একাধিক এলাকায় ছিল হাতির সেফ করিডর। ওই করিডর আজ অবরুদ্ধ। তাই বারবার করিডরের বদলে অন্যত্র হাতি সহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণ ঢুকে পড়ছে। তাই আমাদের সবার আরও বেশি করে গাছ লাগানো দরকার।’