শীত পড়তে না পড়তেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন শুরু হতে দেখি। ক’বছর যাবৎ সিলভার, গোল্ডেন কিংবা প্ল্যাটিনাম জুবিলির বর্ষব্যাপী উদযাপনও হতে দেখছি উত্তরবঙ্গের বহু স্কুলে।
মাঝে মাঝে অনেক বিদ্যালয়ের এই ধরনের অনুষ্ঠানে আমাদের অনেকেরই যাওয়ার সুযোগ হয়ে থাকে। তাতে একটা জিনিস লক্ষ করা যায় : প্রতিযোগিতামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা খেলার পুরস্কার হিসেবে সার্টিফিকেটের সঙ্গে বিজয়ী ছাত্রছাত্রীদের হাতে যেসব পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় তাতে বই, খাতা, কলম, জ্যামিতি বক্স প্রায় থাকেই না। হয় প্লাস্টিকের বালতি, মগ, সাবান কেস অথবা স্টিলের কাপ, প্লেট, চামচ, বাটি, থালা, গ্লাস বা গৃহস্থালিতে দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য ওই ধরনের কিছু সামগ্রী বাছাই করা হয়। যেগুলো সাধারণত প্রত্যেকের বাড়িতেই থাকে, যেগুলোর সঙ্গে শিশুকিশোর মনের কোনও নিকটসংযোগ নেই। ফলে এতে শিক্ষার্থীদের কোনও উপকার হয় না। লাভবান হয় ওইসব সামগ্রী প্রস্তুতকারক বহুজাতিক কোম্পানিগুলি, বাজারের জন্য যাদের ভাবতে হয় না। এতে আমাদের কোন সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটছে তা ভাবা দরকার।
অন্যদিকে বইয়ের লেখকরা, প্রকাশকরা পাঠক ও ক্রেতার অভাবে দিন-দিন একেকটি বইয়ের মুদ্রণসংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছেন বলে শোনা যায়। জেলায় জেলায় মেলা করেও ফি বছর প্রকাশিত বইগুলো বিক্রি করে শেষ করতে পারেন না। যদি পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়গুলি বৎসরান্তে তাদের একবারের ওইসব সাংস্কৃতিক বা ক্রীড়ানুষ্ঠানে শুধু বই উপহারের বন্দোবস্ত রাখতে পারত, বাংলা (বা অন্য ভাষারও) প্রকাশনা জগৎকে ভাঙা মেরুদণ্ড নিয়ে বাঁচতে হত না।
এটা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতাগুলোর মধ্যে একটা। শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তকের বাইরে বিজ্ঞানের বই, জীবনী, ডিটেকটিভ জাতীয় বই, নাটক, গল্প, কবিতা, উপন্যাস ইত্যাদি তুলে দেওয়ার তো এটা একটা মস্ত সুযোগ। তাদের কল্পনাশক্তির বিকাশে, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসু মন তৈরিতে, আবিষ্কারমুখী চিন্তার জাগরণে, সৃজনশীল মানসগঠনে, মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধের উন্মেষে যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। মোবাইল ইন্টারনেটের যুগে ছাত্রছাত্রীরা যে বইয়ের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বলে আমরা সুযোগ পেলেই অভিযোগ করি, হা-হুতাশ করি, তার দায় কি আমাদেরও নয়?
আমাদের ছাত্রাবস্থায়, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েও এই ধরনের যে কোনও প্রতিযোগিতায় পুরস্কার হিসেবে সবচেয়ে বেশি উপহার পেতাম বই। বই উপহার পাওয়াটা প্রায় ঐতিহ্যের অঙ্গীভূত ছিল বলা যায়। বিবাহে, জন্মদিনে, পয়লা বৈশাখ, ২৫ বৈশাখে বই উপহার দেওয়ার কথা তো কবেই ভুলে গিয়েছি আমরা! এবার কি ছাত্রছাত্রীরা তাদের শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীদের কাছ থেকে বই উপহার পাওয়ার সৌভাগ্যও হারিয়ে ফেলল?
( লেখক পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সাহিত্যিক)
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়ালকে (Swati Maliwal) হেনস্তার অভিযোগে…
শিলিগুড়ি, ১৭ মে : ফুলবাড়ি চম্পদগছের বাসিন্দাদের দাবি মেনে ফেন্সিং গেট তৈরির আবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের…
শিলিগুড়িঃ শুধু কলেজপাড়া নয়, এবার শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের এক নার্সিংহোম ও এক হোটেলে…
শিলিগুড়ি: নয়া দাবিতে সরব হলেন শিলিগুড়ি সাইকেলিং কমিউনিটি। শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে…
শিলিগুড়িঃ মুড়িমুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে মানব শরীরের। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার…
রসাখোয়া: ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক সাইকেল আরোহীর। শনিবার দুর্ঘটনাটি (Accident) ঘটে রসাখোয়ার…
This website uses cookies.