উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ স্বামীর সামনেই স্ত্রীকে গণধর্ষণ। এই ঘটনার পরই বিষপান করে আত্মহত্যা করলেন দম্পতি। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বস্তি জেলার রুধৌলির একটি গ্রামে। এই ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে। জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই দুষ্কৃতীরা ধর্ষণ করেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের।
ঘটনাটি গত ২০ সেপ্টেম্বরের। জানা গিয়েছে, বসতি জেলার রুধৌলি পুলিশ স্টেশনের অন্তর্গত এলাকায় থাকতেন ওই দম্পতি। তাদের আট এবং ছ’বছরের দুই পুত্র এবং দেড় বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। এদিন রাতে হঠাৎই বাড়িতে চড়াও হয় গ্রামের কয়েকজন যুবক। স্বামীকে বেঁধে রেখে তাঁর সামনেই দুষ্কৃতীরা বলপূর্বক ধর্ষণ করেন স্ত্রীকে। স্ত্রীর উপর হওয়া পাশবিক অত্যাচার দেখতে বাধ্য করা হয় স্বামীকে। অপকর্ম করে সেখান থেকে পালিয়ে যায় দুই দুষ্কৃতী। ঘটনায় অত্যন্ত ভেঙে পড়েন ওই দম্পতি। বাড়িতে ঢুকে গণধর্ষণ স্ত্রীকে, নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল স্বামীকে। এই লাঞ্ছনা সহ্য করতে পারেননি দুইজনই। সিদ্ধান্ত নেন, একইসঙ্গে বিষ খাবেন। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। একসঙ্গে বিষ খেলেন স্বামী-স্ত্রী। বিষ পানের আগে তাঁরা একটি ভিডিয়ো রেকর্ড করেছিলেন। সেই ভিডিয়োয় গণধর্ষণে অভিযুক্তদের নাম ও মহিলার উপরে হওয়া অকথ্য অত্যাচারের বিবরণ দেন তাঁরা। এরপরই বৃহস্পতিবার ভোরে দুইজনে বিষ খান। সেই ভিডিয়োটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
দম্পতির বড় পুত্র পুলিশকে জানিয়েছে, ২১ সেপ্টেম্বর সকালে তারা যখন স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল, সেই সময় তাদের বাবা-মা জানান, তাঁরা বিষ খেয়েছেন। তাঁদের মৃত্যু হতে পারে। এই কথা শোনার পরই ছেলেটি ফোন করে আত্মীয়দের বিস্তারিত জানান। খবর পেয়ে দম্পতির আত্মীয় এবং প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে এসে আশংকাজনক অবস্থায় দম্পতিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান গোরক্ষপুর হাসপাতালে। ২১ সেপ্টেম্বরই মহিলার মৃত্যু হয়। শুক্রবার হাসপাতালে মৃত্যু হয় মহিলার স্বামীর।
এই ঘটনায় দম্পতির আত্মীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গণধর্ষণের মামলা রুজু করে। তদন্তে নেমে আদর্শ এবং ত্রিলোকী নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারা (গণধর্ষণ) ও ৩০৬ ধারায় (আত্মহত্যায় প্ররোচনা) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, জমি বিক্রি নিয়ে বিবাদের জেরে এই ঘটনা। তবে এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ ছিল কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
