উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুরহস্যের দ্রুত কিনারা হবে। রবিবার এমনই জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের। এই ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিনীত গোয়েল।
রবিবার রেড রোডে একটি অনুষ্ঠানে বিনীত গোয়েল বলেন, ‘‘যাদবপুরের ঘটনায় রবিবার দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগে আরও এক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সবমিলিয়ে গ্রেপ্তারের সংখ্যা আপাতত ৩। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চলছে। এক জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক সর্ব ক্ষণ তদন্ত প্রক্রিয়ার তদারকি করছেন।’’ বিনীত আরও বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে মৃত ছাত্রের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তার ভিডিয়োগ্রাফিও করা হয়েছে। আমরা দ্রুত তদন্ত শেষ করতে পারব বলেই আশা করছি।’’
রবিবার থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে থাকতে শুরু করেছিলেন স্বপ্নদীপ। বুধবার রাতে তিনি মাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, তাঁর ভয় করছে। হস্টেল থেকে তাঁকে নিয়ে যেতেও বলেছিলেন স্বপ্নদীপ। অভিযোগ, তার পর থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। গত বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ২ ব্লকের নীচে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় নদিয়ার স্বপ্নদীপ কুন্ডুকে। স্বপ্নদীপ তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান বলে জানিয়েছিল হস্টেলের জনাকয়েক ছাত্র। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ভোর চারটে নাগাদ সেখানেই মৃত্যু হয় ছাত্রের। এই ঘটনায় হস্টেলে র্যাগিংয়ের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে মৃতের পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সৌরভ চৌধুরী নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তনীকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার রাতে। তার পর শনিবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রবিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্ত নামের আরও দুই পড়ুয়াকে।
এদিকে, স্বপ্নদীপের উপর যে সেই রাতে অত্যাচার হয়েছিল, আদালতে তা জানিয়েছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী। সেই অত্যাচারে অনেকের হাত ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃত দীপশেখর বা মনোতোষও অত্যাচারে জড়িত ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
রাতে ঠিক কী হয়েছিল? কী ভাবে কোন পরিস্থিতিতে বারান্দা থেকে পড়ে গেলেন স্বপ্নদীপ, অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীতের বক্তব্য দ্রুত এই রহস্যের সমাধান হবে।