শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে একটি বাজার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা চলছে। এই বাজারটি তুলে দেওয়ার দাবিতে চিকিৎসক, নার্সরা বারবার সোচ্চার হয়েছেন। ঠিক একই ক্যাম্পাসে আরও একটি বাজার গজিয়ে উঠতে শুরু করেছে। কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় মনোরোগ বিভাগের সামনের ফাঁকা জায়গায় ওই বাজারে গ্যাস জ্বালিয়ে রান্নাও হচ্ছে। যে কোনও সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে চিকিৎসকদের আশঙ্কা। এই বাজারগুলিতে প্রচুর বহিরাগত এসে আশ্রয় নিচ্ছে। তাহলে কেন এভাবে বাজার বসতে দেওয়া হচ্ছে? হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিকের বক্তব্য, ‘এভাবে মেডিকেল চত্বরে বাজার বসানো ঠিক নয়। আমরা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’ পুলিশ জানিয়েছে, মাঝেমধ্যে ওই বাজারের ব্যবসায়ীদের তুলে দেওয়া হয়, কিন্তু সকাল হলেই আবার এসে বসছে।
দীর্ঘদিন ধরে ব্লাড ব্যাংকের পিছনে একটি বাজার রয়েছে। অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থেই ব্যবসায়ীদের কার্যত ওই জায়গায় বাজার বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেখানে দোকানের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রচুর ব্যবসায়ী হোটেল, চায়ের দোকান থেকে সংসারের টুকিটাকি জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। সেখানে গ্যাসের উনুন জ্বালিয়ে দিনরাত রান্না হচ্ছে। অথচ, সেখানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বলতে কিছুই নেই। যে কোনও কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে শুধু এই বাজারই নয়, আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাংক, মেল মেডিসিন, ফিমেল মেডিসিন বিভাগ, প্রসূতি বিভাগ সহ হাসপাতালের একটা বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শুধু তাই নয়, ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন (এনএমসি) মেডিকেল কলেজের পরিকাঠামো পরিদর্শনে এসে বারবার এই বাজার নিয়ে অভিযোগ তুলেছে। মেডিকেলে বাজার কেন? এনএমসির প্রতিনিধিরা সেই প্রশ্ন তুলেছেন। তার পরেও ওই বাজার দিব্যি চলছে। অভিযোগ, ইদানীং ওই বাজারে মদ, গাঁজা, জুয়ার আড্ডা বসছে। টাকা দিলেই ওই বাজারে বিভিন্ন দোকানে মদ পাওয়া যাচ্ছে। প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক সন্দীপ সেনগুপ্তর কথায়, ‘দেশের কোনও মেডিকেল চত্বরেই এমন বাজার নেই। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে এখানে দীর্ঘদিন ধরে একটি বাজার বসে রয়েছে।’
এরই মাঝে মনোরোগ বিভাগের সামনে এবং ডিজিটাল এক্স-রে বিভাগের পাশের ফাঁকা জায়গায় প্রচুর দোকান গজিয়ে উঠেছে। প্রতিদিন ওই দোকানগুলি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে। যার ফলে রোগীদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া, অ্যাম্বুল্যান্সের যাতায়াতেও সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত এই বাজার তুলে দেওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে।