বালুরঘাট: প্রচুর বেতনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কম্পিউটারের কাজ করতে নিয়ে গিয়ে, নির্মাণ শ্রমিকের কাজে লাগানো হচ্ছে। আর এর প্রতিবাদ করায় দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর সহ বিভিন্ন এলাকার ১৩ জন শ্রমিককে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে দুবাইয়ের এক সংস্থার বিরুদ্ধে। ওই শ্রমিকরা এক ভিডিও বার্তার মধ্য দিয়ে তাঁদের পরিবারে কাছে দেশে ফেরানোর আর্জি জানায়। আর ওই বার্তা পাওয়ার পরেই ওই পরিবারদের তরফে এদিন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের বাসভবনে গিয়ে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নিতে অনুরোধ জানানো হয়। সুকান্তবাবুও এ বিষয়ে বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে এদিন জানিয়েছেন।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বেশ কয়েকজন শ্রমিক সম্প্রতি দুবাইয়ে কাজের খোঁজে যায়। তাদের জেলারই এক এজেন্ট এর মাধ্যমে ওই কাজে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের অভিযোগ, দৈনিক প্রায় হাজার টাকার মজুরিতে কম্পিউটারের কাজে লাগানো হবে বলে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গত মাস থেকেই শ্রমিকরা যেতে শুরু করেছিল। সম্প্রতি গত ৫ তারিখেও বিমানে চেপে জেলার আরও কয়েকজন শ্রমিক শারজাতে কাজে পৌঁছোয়। ওই শ্রমিকদের কম্পিউটারে কাজের বদলে তাঁদের নির্মাণ শ্রমিকের কাজে লাগানো হয়। প্রায় ১০-১২ ঘণ্টা ওই কাজের দু একদিন কাজ করতে এই শ্রমিকরা বিদ্রোহ করে বসে। এরপরে তাঁদের শারজা থেকে আবুধাবির একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। জেলার মোট ১৩ জন শ্রমিকের ওই ঘরের মধ্যে আটকে রাখার শুধু নয় তাঁদের খাওয়া-দাওয়া বা অন্যান্য খরচও দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি ওই শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে আসতে চাইলে তাঁদের কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে মাথাপিছু ১ লক্ষ টাকা চাইছে আরবের এক নির্মান সংস্থা। এমন অবস্থায় প্রবল অসহায় পড়া ওই শ্রমিকরা এবারে ভিডিও বার্তার মধ্য দিয়ে তাঁদের পরিবারের কাছে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করার আর্জি জানায়।
ভিডিও বার্তায় শ্রমিকরা জানান, একটি ছোট্ট ঘরের মধ্যে ১৩ জন শ্রমিককে আটকে রাখা হয়েছে। সেখানে তাঁদের খাবার, ওষুধ বা অন্যান্য খরচ দিতে অস্বীকার করছে আরবের ওই সংস্থা। দুদিন ধরে ওই ঘরে আটকে রাখার পর থেকে আরব বা দক্ষিণ দিনাজপুরে কোনও এজেন্টই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে করছে না। খুব অসহায়ভাবে দিন কাটছে আমাদের। দ্রুত দেশে না ফেরানো হলে মৃত্যু ছাড়া কোনও উপায় নেই।
শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা করে ওই শ্রমিকদের দেশে ফেরানোর আর্জি জানান। সাগরিকা কর্মকার নামে এক শ্রমিক পরিবারের সদস্য বলেন, ‘আমার ভাই ও ভাগ্নে গিয়েছে দুবাইয়ে। ওরা গত পাঁচ তারিখেই প্লেনে করে রওনা হয়েছিল। কিন্তু মাত্র দুদিন সেখানে কাজ করার পরই, তাঁদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে ওরা দেশে ফিরে আসতে চাইছে। কিন্তু তাঁদের আটকে রাখা হয়েছে। ওনাদের সকলকে দ্রুত দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নিতে কাছে আমরা আবেদন জানিয়েছি।‘ সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে, ওই শ্রমিকদের সকলকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেব।‘