রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের (Siliguri Hospital) ওপর চাপ কমাতে শহরের সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে (Siliguri Health Center) এখন থেকে তিনদিন করে বসবেন চিকিৎসকরা। শিশুদের ইমিউনাইজেশনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও চিকিৎসা হবে এই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে। বৃহস্পতিবার শহরে আরও চারটি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন মেয়র। এই নিয়ে শহরে ১১টি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেই জিএনএম, এএনএমের পাশাপাশি চিকিৎসকরা থাকবেন। এছাড়া আশাকর্মীরাও থাকবেন ওই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে শিলিগুড়ি পুরনিগমের (Siliguri Municipal Corporation) আবেদনে সাড়া দিয়ে ১৫ জন চিকিৎসক পাঠাচ্ছে স্বাস্থ্য দপ্তর। ওই চিকিৎসকরা চলে এলেই পরিষেবা শুরু করে দেওয়া হবে। শহরের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার তাই এখন থেকে সাধারণ মানুষকে আগে ওই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসা করাতে আসার অনুরোধ করেছেন। শহরে পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরেও সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও সেগুলির প্রচার নেই। তাই অনেকেই না জেনে বাড়ির পাশে সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে না গিয়ে হাসপাতালে চলে যান। যে কারণে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের ওপর চাপ অনেকটাই বাড়ছিল। এই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ওপিডি চালু হলে হাসপাতালের ওপর চাপ অনেকটাই কমবে বলে আশাবাদী পুরকর্তারা।
পুরনিগমের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্মিত সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখনও শৌচালয় চালু করতে পারেনি শিলিগুড়ি পুরনিগম। অভিযোগ, স্থানীয় এক বাসিন্দার বাধায় পুরকর্মীরা শৌচালয়ের পাইপ বসাতে পারছেন না। যে কারণে ভবনের উদ্বোধন হলেও শৌচালায় চালু করা যায়নি। এদিন বিষয়টি মেয়রের কানে যেতেই তিনি প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উন্নয়নের কাজে এভাবে বাধা বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। গৌতমের বক্তব্য, ‘একজন কাজে বাধা দিয়েছেন। এভাবে করলে চলবে না। আমি নিজে এসে মিটিং করব।’ ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঠিক পেছনেই এক ব্যক্তির বাড়ি রয়েছে। তাঁর বাড়ির দিকে সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের জানলা পড়ায় তিনি এর আগেও কাজে বাধা দেন বলে অভিযোগ। টক টু মেয়র অনুষ্ঠানেও একাধিকবার ফোন করেছেন তিনি। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধেই ফের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিভিন্ন পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে একসঙ্গে ২২ জন চিকিৎসক ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। এরপরেই পুরনিগমের পক্ষ থেকে চিকিৎসক চেয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরে তদ্বির করা হয়। সেইমতো আপাতত ১৫ জন চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসককে পাঠানো হচ্ছে। প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শিলিগুড়ি পুরনিগম এলাকায় আরও চারটি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। পুরনিগমের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে এই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির উদ্বোধন করা হয়। এর আগে শহরে আরও ৭টি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু হয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় ওই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ইমিউনাইজেশন ছাড়া আর কোনও কাজ হচ্ছিল না। এবার থেকে অন্তত তিনদিন সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসকরা বসবেন। সেখানে যে কোনও সাধারণ রোগের চিকিৎসা হবে। প্রয়োজন ভিত্তিতে জ্বর, সর্দি, কাশি সহ জীবনদায়ী ওষুধও মিলবে। প্রাথমিক সবধরনের চিকিৎসাই পাবেন রোগীরা। পুরনিগমের থেকে আরও ১৫ জন চিকিৎসকের চাহিদা পাঠানো হয়েছে নবান্নে। ওই চিকিৎসকরা চলে এলে সপ্তাহে ছয়দিন ধরেই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকরা রোগী দেখবেন বলে জানিয়েছেন পুরনিগমের স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত।