মেটেলি: ডুয়ার্স তথা উত্তরবঙ্গের প্রাচীন কালীপুজোগুলোর মধ্যে অন্যতম মেটেলি কালীবাড়ির পুজো। শতাব্দী প্রাচীন এই পুজো এবার ১৫২তম বর্ষে পা দিল। মেটেলি কালীবাড়ির পিছনে অনেক ইতিহাস থাকলেও এখনও তার উদঘাটন পুরোপুরি হয়নি। জানা গিয়েছে, মেটেলি এলাকাটি একসময় ভুটানের অন্তর্গত ছিল। ওই সময় ভুটানিরা এখানে পুজো করতো। ১৯৬৮ সালে কালীবাড়ির পুরোনো মন্দিরের ওপর একটি বড়ো গাছ পরে মন্দিরটি ভেঙে যায়। ওই সময় নতুন মন্দির নির্মাণের জন্য কাজ করার সময় মাটির ভিতর থেকে একটি মাটির প্রদীপ, সিমেন্টের বেদি সহ আরও নানা ঐতিহাসিক জিনিস পাওয়া যায়। সিমেন্টের ওই বেদির মধ্যে খোদাই করে লেখা ছিল বাংলা ১২৭৮ সাল। সেই হিসেবেই এবারের পুজো ১৫২তম। মন্দিরে ১৩৩০ সাল খোদাই করে লিখা একটি বলি দেওয়ার ছুরিও পাওয়া গিয়েছে। ওটা দিয়ে বলি দেওয়া হত। ১৯৮৩ সালে মন্দির চত্বর খুঁড়ে একটি সিমেন্টের পিলার পাওয়া যায়। ভয়ে আর সেই পিলার তোলেনি মন্দির কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে সেটিকে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। কষ্টি পাথরের এখানকার কালীমূর্তিও অদ্ভুত দর্শনের। কালী মূর্তির চোখ দুটো বড়ো বড়ো টানা টানা। প্রাচীন এই মন্দিরে পুজো দিতে সারাবছর দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসে।
মেটেলি কালীবাড়ি সম্পাদক বিশ্বজিৎ মণ্ডল, সভাপতি দিলীপ গুহ রায় রা জানান, প্রতিমার গঠন দেখে মনে হয় ওই প্রতিমার মধ্যে হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মের সংমিশ্রণ রয়েছে। পুজোয় কোনও প্রকার বলি দেওয়া হবে না। ৬৪ ডেসিমেল জমির ওপরে থাকা কালীবাড়ির অজানা ইতিহাস উদঘাটনের জন্য কালীবাড়ির আগের কমিটি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়েছে। সরকারিভাবে মেটেলি কালীবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণার আবেদন জানান তারা। পুজোর সময় ছাড়াও সারা বছর মেটেলি কালীবাড়িতে দেশ বিদেশের বহু পর্যটকও আসে পুজো দিতে।