প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লিঃ বালাসোর রেল দূর্ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার জন্য সাসপেন্ড করা হল চার রেলকর্মীকে। দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রেল মন্ত্রকের তরফে আরও চারজনকে বহিষ্কার করা নিয়ে অর্ডার জারি করা হয়, অভিযোগ আনা হয়েছে বহিস্কৃত রেলকর্মীরা তাদের কাজে যথাযথা সজাগ ছিলেন না, থাকলে সেই দূর্ঘটনা এড়ান সম্ভব হত৷ কিন্তু সুরক্ষার কারণে সাসপেনশন অর্ডার পাওয়া এই চার রেলকর্মীর পরিচয় প্রকাশ্যে আনেনি রেল মন্ত্রক। তবে এটা জানা গেছে এই চারজনের মধ্যে রয়েছেন দূর্ঘটনার দিন কর্মরত জনৈক স্টেশন মাস্টার, বালাসোরে রেল ট্রাফিক ইনস্পেকটর, সিগনাল টেকনিশিয়ান এবং অ্যাসিস্টেন্ট ডিভিশনাল সিগনাল এবং টেলিকম ইঞ্জিনিয়ার।
প্রসঙ্গত, বালাসোর কাণ্ডে এ নিয়ে গত একমাসে ৭ জন রেলকর্মী সাসপেন্ড করল রেল মন্ত্রক যার মধ্যে কর্তব্যে অবহেলার জন্য তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ পূর্ব রেলের জিএম অনিল কুমার মিশ্র জানিয়েছেন, ‘চারজন ব্যক্তিকে শুক্রবার কর্তব্যে অবহেলার জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁরা নিজেদের কাজে যথেষ্ট সজাগ ছিলেন না। থাকলে এই দূর্ঘটনা এড়ান যেত।’
উল্লেখ্য, গত ২ জুন ওড়িশার বালাসোরে বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়িতে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয় আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এই ভয়াবহ দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় করমণ্ডলের সবক’টি কামরা। একইসময় উলটো দিকের লাইনে আসা যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে ধাক্কা মেরে করমণ্ডলের কামরাগুকি লাইনচ্যুত হয়ে পাশের লাইনে ছিটকে পড়ে। তিনটি ট্রেনের এই সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ২৯৩ জনের, গুরুতর আহত হন হাজারেরও বেশি। রেলের তদন্তের পাশাপাশি এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইকে৷ তদন্ত শুরুর প্রায় এক মাস পর গত ৭ জুলাই তিন রেলকর্মীকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। ধৃত তিন রেলকর্মীর নাম অরুণকুমার মোহন্ত, মহম্মদ আমির খান ও পাপ্পু কুমার৷ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দেওয়া হয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে৷ এছাড়াও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে আইপিসি’র ২০১ ধারাও দেওয়া হয়েছে ধৃত তিন রেলকর্মীর বিরুদ্ধে৷ এবার এই দুর্ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও চার রেলকর্মীকে বহিস্কার করা হল।