শুভজিৎ দত্ত, নাগারাকাটা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশের ২০১৬-র প্যানেল বাতিলের তালিকায় জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার অন্তত ৫০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা (Bengal Teacher) রয়েছেন। এর বাইরে গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পদের শিক্ষাকর্মীদের সংখ্যাও প্রায় একইরকম। হাইকোর্টের রায়ে অন্তত হাজারখানেক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিলে (Teacher Job Cancellation) স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন সহ অন্যান্য কাজে ডামাডোল পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। এমনিতেই বহু স্কুলে প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক কম। তার উপর এতজন শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ায় কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে শিক্ষক মহল।
জলপাইগুড়ির এক শিক্ষা আধিকারিক বলেন, ‘অন্তত ৫০০ শিক্ষক ও ৫০০ শিক্ষাকর্মী রায়ের আওতাধীন হচ্ছেন। তবে এসএসসি থেকে এখনও কোনও তালিকা আসেনি।’
জলপাইগুড়ি জেলায় উচ্চপ্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মোট স্কুলের সংখ্যা ৩৪৮টি। এর মধ্যে উচ্চপ্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ১৪১টি। মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা হয় ৩৬টি স্কুলে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুটি স্তরই রয়েছে এমন স্কুলের সংখ্যা ১৭১টি।
স্কুলগুলি যে জটিলতা তৈরির আশঙ্কায় প্রমাদ গুনছে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের কথাতেই পরিষ্কার। যেমন ময়নাগুড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শিবব্রত রায় বলেন, ‘আমার স্কুলে ওই বছরের এসএলএসটি থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত ৪ জন রয়েছেন। যখন যেমন সরকারি নির্দেশ আসবে সেইমতো পদক্ষেপ করা হবে।’ গয়েরকাটা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন দে সরকারের কথায়, ‘আমাদের এমন শিক্ষকের সংখ্যা ৬। আগে থেকেই শূন্যপদের সংখ্যা ১১। সবমিলিয়ে দুশ্চিন্তা তো রয়েইছে।’ বানারহাটের চামুর্চি ভারতীয় পাঠশালা নামে একটি স্কুলে মোট অনুমোদিত শিক্ষক পদের সংখ্যা ৬০। বর্তমানে কর্মরত আছেন ১৯ জন। তাঁদের মধ্যে প্যানেল বাতিল হওয়ায় সেই তালিকায় স্কুলটির ৭-৮ জন পড়ে যাচ্ছেন। প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা বলেন, ‘পড়াশোনা চালানো নিয়ে সমস্যা হবে।’
বানারহাট গার্লস হাইস্কুলে মোট শিক্ষিকার সংখ্যা ৬। তাঁদের মধ্যে ৪ জনই রায়ের আওতাধীন হয়ে পড়ছেন। ক্রান্তির দেবীঝোরা হাইস্কুলে এমন শিক্ষকের সংখ্যা ৬।
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাপতি অঞ্জন দাস বলেন, ‘যাঁরা যোগ্য তাঁদের পাশে অবশ্যই সরকার ও সংগঠন থাকবে।’ এবিটিএ’র জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায় বলেন, ‘যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পাশে সংগঠন নৈতিকভাবে রয়েছে।’