জলপাইগুড়ি: বাংলাদেশের পাবনার বাসন্তীপুজোর আমেজ জলপাইগুড়ি পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দনগরে। গোস্বামীবাড়ির এই পুজো দেখতে দেখতে এবার ৩৫০ বছরে পা দিল। সাত-আট পুরুষ ধরে চলে আসা পুজো অন্যমাত্রা যোগ করেছে পরিবারে। আজও ঢেঁকিভাঙা চালে বাসন্তীদেবীকে ভোগ নিবেদন করেন তাঁরা। পুত্রবধূ স্বপ্না গোস্বামী বলেন, ‘১৯ বছর হল এই বাড়িতে এসেছি। আমি একমাত্র বৌমা। বিয়ের পর থেকে আমি মায়ের পুজোর যাবতীয় কাজ করি। বেশ ভালো লাগে। আজকাল ঢেঁকির প্রচলন নেই বললেই চলে। কিন্তু আজও বাসন্তীপুজোয় আমাদের বাড়িতে ঢেঁকি চলে। মাকে ওই চাল দিয়ে অন্নভোগ দেওয়া হয়।’ মঙ্গলবার অষ্টমীতে ঢাকের তালে নিষ্ঠাসহকারে গোস্বামীবাড়িতে পূজিতা হলেন বাসন্তীদেবী।
বংশপরম্পরায় হওয়া এই পুজোর দায়িত্ব এখন অমর গোস্বামীর কাঁধে। অমর বলেন, ‘বাংলাদেশে থাকাকালীন পূর্বপুরুষেরা বৈষ্ণব মতে পুজো করতেন। জায়গা পরিবর্তন হলেও নিয়মনীতির একচুল হেরফের হয়নি। সেই নিয়ম মেনে প্রতিমা বানানো থেকে পুজো চলছে।’ তাঁর সংযোজন, ‘আমাদের পুজোয় মায়ের ডান দিকে নয়, বামে থাকেন সিদ্ধিদাতা গণেশ। মায়ের কাছে সংকল্পের সময় শুধু নিজেদের নয়, সকলের জন্যই প্রার্থনা করা হয়৷ মা যেন সকলকে ভালো রাখেন। তবেই এত পুরোনো পুজোর মাহাত্ম্য বজায় থাকবে।’ মঙ্গল, শনি বা বৃহস্পতিবার হোক না কেন, দশমীর দিন বিসর্জন হবে বলে জানালেন পরিবারের সদস্যরা।
এদিন সকাল থেকে গোস্বামীবাড়িতে পুজোর চরম ব্যস্ততা লক্ষ করা গেল। দূরদূরান্ত থেকে প্রচুর ভক্ত এসেছিলেন মায়ের পুজো দেখার পাশাপাশি অঞ্জলি দিতে। অঞ্জলি দিচ্ছিলেন বামনপাড়া থেকে আসা প্রিয়াংকা দাস। প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘নতুন বিয়ে হয়ে আসার পর শুনেছি এখানে শ্বশুরবাড়ির সকলে পুজো দেন। ৩৫০ বছরের পুজোতে অঞ্জলি দেওয়ার লোভ সামলাতে না পেরে এসেছি। খুব ভালো লাগছে। মা ভালো রাখলে আগামী বছরও আসব।’