জামালদহ: পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য ভুল বাসে উঠে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগই হারাতে বসেছিলেন দুই ছাত্রী। হলদিবাড়ির দেওয়ানগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা পূজা রায় ও জবা রায়ের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের পরীক্ষায় বসার স্বপ্ন পূরণ করলেন জামালদহের এক ব্যবসায়ী।
দুই ছাত্রী পূজা রায় ও জবা রায়। দু’জনেই এবছর হলদিবাড়ি ব্লকের দেওয়ানগঞ্জ হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে। তাঁদের দুজনেরই স্বপ্ন হাসপাতালের নার্স হয়ে রোগীদের সেবা করা। তাই নার্সিং পড়ার জন্য এন্ট্রান্স এএনএম ও জিএনএম পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপ করেছিল তাঁরা। রবিবার সেই পরীক্ষায় দুই বান্ধবীর সেন্টার পড়েছিল ধূপগুড়ির সুকান্ত মহাবিদ্যালয়ে। পরীক্ষার সময় সকাল ১১টা। পরীক্ষা দিতে এদিন সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল দুজনেই। সঙ্গে ছিলেন পুজার বাবা অচিন্ত্য রায়। তাঁরা একটি বাসে চেপে ধূপগুড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু তখনও বুঝতে পারেননি যে তাঁরা ভুল করে মাথাভাঙ্গার বাসে উঠে পড়েছেন। সেই ভুল ভাঙে জামালদহের কিছুটা আগে বড়কামাত এলাকায়। কনডাক্টরের থেকে জানতে পারেন এই বাস মাথাভাঙা যাবে। ঘড়ির কাঁটায় তখন ১০.০৫ মিনিট। এদিকে অচিন্ত্যবাবুর কাছে গাড়ি ভাড়া করার টাকাও নেই। মাথাভাঙাগামী বাস তখন জামালদহ বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের এইরকম অবস্থায় বাসস্ট্যান্ডে দেখে ছুটে আসেন সেখানকার মিষ্টি ব্যবসায়ী মৃন্ময় ঘোষ। তিনি পঞ্চপান্ডব নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যও বটে। দুই ছাত্রী ও অভিভাবকের কাছে সমস্যার কথা শুনে একমুহূর্ত দেরি করেননি মৃন্ময়বাবু। নিজের টাকায় তৎক্ষণাৎ একটি ছোট গাড়ি ভাড়া করে দেন তিনি। দুই ছাত্রী রওনা হয় পরীক্ষাকেন্দ্রের উদ্দেশ্যে। রাস্তায় যাতে নাকা চেকিং না হয় এসপিকে ফোন করে সেই ব্যবস্থাও করে দেন তিনি। অবশেষে পরীক্ষা হলে সঠিক সময়ে পৌঁছে যায় দুই ছাত্রী। পরীক্ষা শেষে মুখে হাসি পূজা ও জবার। এভাবে পাশে দাঁড়ানোয় মৃন্ময়বাবুর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে দুই ছাত্রী।
অচিন্ত্য রায়ও বলেন, ‘আজ মৃন্ময়বাবু না থাকলে আমার মেয়ে ও তাঁর বান্ধবী পরীক্ষায় বসতে পারতো না।‘