আসানসোলঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল পুরনিগম সহ গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে জ্বরের প্রকোপ দিন প্রতিদিন বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ডেঙ্গি। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একদিনে মৃত্যু হল আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বার্ণপুর ও জামুড়িয়ার বাসিন্দা দুই মহিলার। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের মা। এই নিয়ে গত ১০ দিনে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে মোট তিনজনের মৃত্যু হল। একই সঙ্গে রবিবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গেছে, আসানসোল জেলা হাসপাতালে ৭ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন। তার মধ্যে একজন রয়েছেন রাজ্য পুলিশের আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে কর্মরত এক কনস্টেবল। পাশাপাশি রবিবার দুপুর পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৫০ জনেরও বেশী রোগী বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন বলে জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে বাড়ছে ভর্তির সংখ্যা। রোগীদের মধ্যে বয়স্কদের সঙ্গে শিশুরাও রয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অত্যাধিক হারে বেড়ে যাওয়ায় নাজেহাল অবস্থা জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এক একটা বেডে তিনজন রোগীকে রাখা হয়েছে বলে পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হচ্ছে। হাসপাতালের তরফে বলা হয়েছে, এত রোগীর চাপ। তাই তাদের কিছু করার নেই।
প্রসঙ্গতঃ, শনিবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালের সিসিইউতে মৃত্যু হয় ডেঙ্গি আক্রান্ত এক মহিলার। আসানসোল পুরনিগমের জামুড়িয়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দী গ্রামের বাসিন্দা মৃত মহিলার নাম বুধনী হাঁসদা (৩৭)। সে এলাকারই একটি ইট ভাটায় কাজ করতেন। গত ২০ অগাস্ট এই মহিলা জ্বর নিয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে রক্ত পরীক্ষায় তার ডেঙ্গি ধরা পড়ে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। শেষ রক্ষা হল না, সেখানেই শনিবার মৃত্যু হয় তাঁর।
অন্যদিকে, বার্নপুরের আপার পুরান হাটের নতুন পল্লীর বাসিন্দা চন্দনা চট্টোপাধ্যায় (৬৫) গত বৃহস্পতিবার জ্বর ও হৃদরোগ সংক্রান্ত অসুস্থতা নিয়ে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি পজেটিভ ধরা পড়ে। এরপর অন্যান্য অসুস্থতার সঙ্গে ডেঙ্গিরও চিকিৎসা শুরু হয়। তিনিও শনিবার ঐ বেসরকারি হাসপাতালে সকালে মারা গেছেন বলে জানান তার ছেলে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়।
রবিবার সকালে আসানসোল পুরনিগমের স্বাস্থ্য দপ্তরে কাছে এই দুটি মৃত্যুর খবর আসে। এই প্রসঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের স্বাস্থ্য দপ্তরের মেয়র পারিষদ দিব্যেন্দু ভগত বলেন, দুটি ক্ষেত্রেই পুরনিগমের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও পুরনিগমের ৯০০ র বেশি টিম গোটা পুর এলাকায় ডেঙ্গির মোকাবিলায় কাজ করছে। কোথাও যাতে জল না জমে তা দেখার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় মানুষকে সচেতন করছেন টিমের সদস্যরা।