কলকাতা: এগরায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের! বৃহস্পতিবার খাদিকুল গ্রামে গিয়ে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশকে নিশানা করেন দিলীপ।
মঙ্গলবার দুপুরে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এগরার খাদিকুল গ্রাম। গ্রামের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে দেহ। ঘটনায় ৯ জনেপ মৃত্যু হয়। জখম হন বেশ কয়েকজন। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরও এখনও উত্তপ্ত রয়েছে এলাকা। এদিন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে যান বিজেপি নেতা। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে দিলীপ দাবি করেন, ‘আমি জানি ২২ জন কাজ করতেন কারখানায়। ঘটনার সময় সকলেই ছিলেন। বিস্ফোরণে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে।’
পাশাপাশি দিলীপ বলেন, সাধারণ মারামারি করলে যে ধারা দেওয়া হয়, তা দেওয়া হয়েছে ভানুকে। ছাড়া পেয়ে আবার ব্যবসা শুরু করবে। মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় দিলীপের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ দিয়ে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলীপ বলেন, ‘পুলিশের ভূমিকায় মানুষ ক্ষুব্ধ।’ তিনি অভিযোগ করেন, হামলার খবর থাকা সত্ত্বেও পুলিশ সঠিক সময়ে যায়নি, কোনও পদক্ষেপ করেননি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল এলাকায় একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে গ্রামের রাস্তায় ছিন্নভিন্ন হয়ে দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিস্ফোরণে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়। জখম হন বেশ কয়েকজন। কী করে এমন ঘটনা ঘটল, তা জানতে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, এই ঘটনায় এগরা থানার আইসিকে শোকজ করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযুক্ত ভানু কীভাবে জামিন পেলেন, তা জানতে চান তিনি। এরপরই আইসিকে শোকজ করা হয়।
অপরদিকে, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আগে থেকেই ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার থেকেই এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি করেন শুভেন্দু। গতকাল বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শনে যান তিনি। বিজেপির তরফে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিষয়টি লঘু করে দেখানোর অভিযোগ তোলা হলেও তৃণমূলের পালটা দাবি, বিস্ফোরণের তথ্যপ্রমাণ সহ ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার আগে বিস্ফোরক আইনের ধারা দিলে মামলা দুর্বল হয়ে যাওয়ারই আশঙ্কা থাকে।
এদিন বিস্ফোরণকাণ্ডে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চায় কলকাতা হাইকোর্ট। ঘটনার ভয়াবহতার ছবি দেখে শিউরে ওঠেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। পাশাপাশি আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিস্ফোরণের যা ‘ভয়াবহতা’, তাতে বিস্ফোরক আইনে মামলা রুজু করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সিআইডি এ বিষয়ে খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে। বিস্ফোরক আইনে মামলা হলে আইন মেনে তদন্ত করতে পারবে এনআইএ-ও। শুভেন্দু অধিকারীর করা একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে আদালত বৃহস্পতিবার একথা জানায়।