দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: ২০১৬ সালে রায়গঞ্জ পুরসভার (Raiganj Municipality) মেয়াদ শেষ হয়। নির্বাচিত পুরপ্রধান মোহিত সেনগুপ্তকে (Mohit Sengupta) সরিয়ে পুরসভায় বসে প্রশাসক। পুরপ্রশাসকের দায়িত্ব পান তৎকালীন রায়গঞ্জের (Raiganj) মহকুমা শাসক টিএন শেরপা। এরপরেই ২০১৭ সালে প্রাক্তন পুরপ্রধান মোহিত সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে ৮.৫০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ আনেন প্রশাসক। শুরু হয় মামলা। পরবর্তীতে রায়গঞ্জের নিম্ন আদালতে জামিন নেন মোহিতবাবু। সেই সময় মোহিতবাবু বিধায়ক থাকায় মামলা চলতে থাকে সল্টলেকের এমপি, এমএলএ’দের জন্য বিশেষ আদালতে। দীর্ঘ সওয়াল জবাব ও সাক্ষ্য গ্রহণের পর মঙ্গলবার ওই বিশেষ আদালত মোহিতবাবুকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করে এবং বেকসুর খালাস করে দেয়।
লোকসভা নির্বাচন চলার মধ্যে বিশেষ আদালতের এই রায় কংগ্রেস নেতার পক্ষে যাওয়া রাজনৈতিক জয় বলেই মনে করা হচ্ছে। এই জয়কে সততার জয় বলে দাবি করেছেন মোহিতবাবু। আদালতের রায়ে উৎফুল্ল বাম ও কংগ্রেস শিবির।
যদিও তৃণমূল খুব একটা গুরুত্ব দিতে চায়নি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের কথায়, ‘বেকসুর খালাস মানে তিনি নির্দোষ এমন নয়। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলির উপযুক্ত প্রমাণ পুলিশ দাখিল করতে পারেনি বলেই বেকসুর খালাস হয়েছে।’
এই কংগ্রেস নেতার ঘনিষ্টদের দাবি, দীর্ঘ আট বছর ধরে দূর্নীতির অভিযোগের বোঝা বইতে হয়েছিল মোহিতকে। তৃণমূল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে হাতিয়ার করে বাম-কংগ্রেসকে বিঁধতে ছাড়েনি। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ ছিল, তাঁর রাজনৈতিক জীবনে কলঙ্ক দিতেই মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। আজ সেই অভিযোগ থেকে মোহিতবাবুর মুক্তি ঘটল। আট বছর ধরে চলা এই মামলায় পুরসভার আধিকারিক, মহকুমা শাসক সহ ১৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
এদিন মোহিতবাবু দাবি করেন, ‘আমাকে একাধিকবার শাসকদলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু আমি যোগ না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। আমাকে জেলে পাঠানোর বন্দোবস্ত করেছিল। আজ সেই মামলাটি আদালত পুরোপুরি খারিজ করে দিয়ে আমাকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে।’
প্রাক্তন পুরপ্রধানের আরও অভিযোগ, ২০১৬ সালে আমি সমস্ত কিছু মহকুমা শাসককে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ২০১৭ সালের মার্চ মাসে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। আমাকে শেষ পর্যন্ত নিম্ন আদালতে জামিন নিতে হয়। আজ বিশেষ আদালত আমাকে বেকসুর খালাস করে দেয়। সততার জয় হল।’
অন্যদিকে, মোহিতবাবুর আইনজীবী আবদুল রশিদ বলেন, ‘বিচারক সমস্ত সাক্ষ্য গ্রহণের পর এবং সমস্ত পেপার ও ডকুমেন্টস দেখে বেকসুর খালাস করেছেন মোহিতবাবুকে।’