দিনহাটা: চিকিৎসক সংকটের জেরে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের (Dinhata Sub-divisional Hospital) আউটডোর পরিষেবায় প্রচণ্ড সমস্যা হচ্ছে। এই হাসপাতালের আউটডোরে (Outdoor) ১১টি বিভাগ রয়েছে। সোমবার সেই বিভাগগুলির সাতটিই বন্ধ ছিল। এর জেরে এদিন হাসপাতালে আসা রোগীরা খুবই সমস্যায় পড়েন। অনেকে ক্ষোভও জানান।
এই হাসপাতালে ৩০০টি বেড রয়েছে। বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে কিছুদিন আগে নিয়োগ করা হলেও এখনও ১৮টি পদ খালি পড়ে। দন্ত বিভাগের চিকিৎসক উচ্চশিক্ষার (higher education) জন্য বাইরে যাওয়ায় বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে ১৯ হয়েছে। পাশাপাশি, বিভাগটি অনিদির্ষ্টকালের জন্য বন্ধ পড়ে থাকছে। এদিনও আউটডোরের এই বিভাগটি বন্ধ ছিল। স্ত্রীরোগ, চক্ষুরোগ বিভাগের চিকিৎসক ছুটিতে। অস্থি, সার্জারি ও নাক-কান-গলা বিভাগের একজন করে চিকিৎসক থাকায় তাঁরা সপ্তাহে দু’দিনই বহির্বিভাগে বসেন। এদিন তাঁরা হাসপাতালে উপস্থিত না থাকায় আউটডোরের এই বিভাগগুলি বন্ধ ছিল। তবে মেডিসিন বিভাগটি এদিন কী কারণে বন্ধ ছিল তা পরিষ্কার নয়।
প্রমীলা বর্মন এদিন আউটডোরের স্ত্রীরোগ বিভাগে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। বিভাগটি বন্ধ দেখে তিনি হতাশ হয়ে পড়ে ক্ষোভ জানান। একই সুরে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা অনেকেই এদিন সরব হন। হাসপাতালের সুপার রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘কোনও চিকিৎসক ছুটিতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই এই বিভাগটি বন্ধ থাকে। এদিনও ছিল। তবে বেশ কিছু বিভাগে মাত্র একজন করে চিকিৎসক থাকায় প্রতিদিন আউটডোরে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলি চালানো যাচ্ছে না। আরও চিকিৎসক চেয়ে ওপরমহলে আবেদন করা হয়েছে।’ কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুকান্ত বিশ্বাস বললেন, ‘গত দু’বছরে একাধিক চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়েছে। আমরা হাতে কোনও চিকিৎসককে পেলে তাঁকে কর্মস্থলে পাঠিয়ে যাচ্ছি। তবে তা সত্ত্বেও কয়েক জায়গা থেকে সমস্যার অভিযোগ পেয়েছি। আমরা এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে রাজ্য সরকারকে দুষে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শুভ্রালোক দাস বললেন, ‘রাজ্যজুড়ে সময়মতো চিকিৎসক নিয়োগ না করার কারণেই সমস্যা হচ্ছে। আউটডোরে যে সমস্ত চিকিৎসকের বসার কথা, তাঁরা সেখানে বসছেন কি না তা দেখার জন্য কোনও মনিটরিং সেল নেই। চিকিৎসকরা তাঁদের ইচ্ছেমতো পরিষেবা দিচ্ছেন। এর জেরে রোগীরা সমস্যায় পড়ছেন।’ রাজ্য সরকারের তরফে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে বলে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান উওরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই হাসপাতালে যে চিকিৎসক সংকট চলছে তা অস্বীকার করার নয়। তবে চেষ্টা চালিয়ে গত কয়েক বছরে সমস্যা অনেকটাই মেটানো গিয়েছে। আগমীতে এই সমস্যা যাতে আরও মেটানো যায় সেই চেষ্টাই চলছে।’