সায়নদীপ ভট্টাচার্য, বক্সিরহাট: স্বাস্থ্যকর্মীর কাজ করছেন সাফাইকর্মী! এমনই অভিযোগ উঠেছে তুফানগঞ্জ-২ নম্বর ব্লকের বক্সিরহাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। অসম-বাংলা সীমানা লাগোয়া তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত সহ অসমের ধুবড়ি জেলার কাইমাটি, ছোটোগুমা ও ছাগলিয়ার বহু বাসিন্দার ভরসা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেখানে এমন অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়েছে জেলায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বক্সিরহাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গোকুল বিশ্বাস নামে এক গ্রুপ ডি স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। অভিযোগ, এক বছর ধরে তিনি নিজে কাজে না এসে রামলাল বাসফোর নামে এক অস্থায়ী সাফাইকর্মীকে দিয়ে তাঁর কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। কাজে না এলেও ঘরে বসেই বেতন পাচ্ছেন গোকুল।
আর অন্যদিকে, ওই সাফাইকর্মীই দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীদের ড্রেসিং, সেলাই সহ চিকিৎসাধীন রোগীদের স্যালাইন পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন। একাংশ স্থানীয় বাসিন্দা এবং রোগীর পরিবারের অভিযোগ, বিএমওএইচের মদতেই এসব হচ্ছে। তাঁর মদত ছাড়া এটা সম্ভব নয়। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা না করেই তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে রেফার করার অভিযোগও উঠেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের মধ্যে।
মহিষকুচি-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা জহিরুল মিয়াঁ। তাঁর অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। স্বাস্থ্যকর্মীর বদলে একজন সাফাইকর্মী স্ত্রীর স্যালাইন পরিবর্তন, ইনজেকশন দেওয়া সহ সমস্ত কাজ করছেন। এতে যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে তার দায় কে নেবে? প্রশ্ন তাঁর।
এ ব্যাপারে ওই সাফাই কর্মী রামলাল বাসফোর জানান, ডি গ্রুপের কর্মী সংকট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তাই বিএমওএইচের নির্দেশে দিনে তিনশো ও রাতে চারশো টাকার বিনিময়ে তিনি সমস্ত কাজ করছেন। অন্যদিকে, গ্রুপ ডি স্বাস্থ্যকর্মী গোকুল বিশ্বাসের বক্তব্য, তিনি যদি ডিউটি নাই করতেন তাহলে বেতন পাচ্ছেন কীভাবে?
এদিকে, মদতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএমওএইচ শেখ এমডি মহসিন। তিনি বলেছেন, ‘গোকুল বিশ্বাস নামে ওই গ্রুপ ডি স্বাস্থ্যকর্মী কাজে যোগ না দিলেও অপর একজনকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। দিনের পর দিন এটা চলছে। তাঁকে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য একাধিকবার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’ অন্যদিকে, খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন কোচবিহার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বিশ্বাস।