সানি সরকার, শিলিগুড়ি: সপ্তাহে মঙ্গলবার করে গড়াবে না নিউ জলপাইগুড়ি-পাটনা বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express)। কিন্তু বাংলা এবং বিহারকে নতুনভাবে রেল (Rail) যোগাযোগে জুড়তে সেমি হাইস্পিড ট্রেনটিকে সবুজ পতাকা দেখানোর জন্য মঙ্গলবারই বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওইদিন সকাল সাড়ে ৯টায় ট্রেনটির পথ চলা শুরু হলেও বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হবে ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার থেকে। মঙ্গলবার গুজরাটের (Gujarat) আহমেদাবাদ থেকে একগুচ্ছ রেল প্রকল্পের কাজের সূচনার পাশাপাশি ১০টি বন্দে ভারতকে সবুজ পতাকা দেখাবেন প্রধানমন্ত্রী। তার মধ্যে রয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি-পাটনা বন্দে ভারতও। প্রধানমন্ত্রী শিলান্যাস করবেন আলিপুরদুয়ারে একটি অতিরিক্ত পিট লাইনের। ফলে ভবিষ্যতে আলিপুরদুয়ার থেকে বন্দে ভারত চলাচলের সম্ভাবনা রয়েছে।
এনজেপি-পাটনা বন্দে ভারত প্রসঙ্গে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘দ্রুতগামী ট্রেনটি চালু হলে দুই রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নতি ঘটবে। সাধারণ মানুষ যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই প্রসার ঘটবে দুই রাজ্যের ব্যবসা-বাণিজ্যের।’
১৫ মাসের মধ্যে তিন-তিনটি বন্দে ভারত পেল নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি)। হাওড়া এবং গুয়াহাটির পর বন্দে ভারতে পাটনার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে এনজেপি। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে ট্রেনটি সকাল ৫টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে বিহারের রাজধানী পাটনায় পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে এবং পাটনা থেকে দুপুর ১টায় ছেড়ে রাত ৮টায় পৌঁছাবে এনজেপিতে। যাত্রাপথে কিশনগঞ্জ এবং কাটিহারে দাঁড়াবে ট্রেনটি। অর্থাৎ দুটি স্টপই বিহারে। মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয়দিনই চলবে সেমি হাইস্পিড ট্রেনটি। ইতিমধ্যে আট কোচের ট্রেনটির পরীক্ষামূলক যাত্রা সফলভাবে শেষ হয়েছে। এনজেপিতে পিট লাইন থাকায় ট্রেনটির রক্ষণাবেক্ষণ হবে এখানেই। ট্রেনটির মালিকানা স্বত্ব পেয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। ফলে এনজেপি-গুয়াহাটির পর আরও একটি ট্রেনের মালিকানা পেল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল।
চলতি বছর গোড়াতেই ট্রেনটি চলাচলের কথা থাকলেও তা হয়নি। ফলে সে সময় অনেককেই হতাশ করেছে। তবে অবশেষে ট্রেনটির যাত্রা শুরু হচ্ছে জানতে পেরে খুশি শিল্প-বাণিজ্য মহল। শিল্পপতি সঞ্জিত সাহা বলেন, ‘এনজেপি এবং পাটনার মধ্যে বন্দে ভারত চলবে, এটা আমাদের জন্য খুব ভালো খবর। এর ফলে দুই রাজ্যের মানুষ ও ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।’
লোকসভা ভোটের (Loksabha election) মুখে বন্দে ভারতকে তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি, যা স্পষ্ট হয়েছে শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষের বক্তব্যে। তিনি বলছেন, ‘রেল ও সড়ক ক্ষেত্রে মোদিজির নজরে উপকৃত হচ্ছে উত্তরবঙ্গ। কীভাবে পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে হয়, প্রধানমন্ত্রী দেখিয়ে দিচ্ছেন। যত বেশি পরিকাঠামো উন্নয়ন ঘটবে, ততই ওই এলাকার কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে।’
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষের কথায়, ‘ট্রেনটি আরও আগে চালু করা উচিত ছিল। তাহলে আরও বেশি পরিষেবা পেতেন মানুষ। এখন করা হচ্ছে ভোটের লক্ষ্যে। মানুষ এত বোকা নয়।’