উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali) ধর্ষণ সহ বিভিন্ন অভিযোগ সম্পূর্ণ সাজানো! গোপন ক্যামেরায় তোলা ভিডিওতে স্থানীয় এক বিজেপি (BJP) নেতাকে এমনই বলতে শোনা যাচ্ছে। ভিডিও (Sandeshkhali Viral Video) ঘিরে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ।
ভিডিওতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে তিনি হলেন গঙ্গাধর কয়াল। তিনি সন্দেশখালি ২ ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি বলে পরিচিত। সন্দেশখালিতে গোপন ক্যামেরা অভিযানের মাধ্যমে এই ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভাইরাল ভিডিওটিতে গঙ্গাধরকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘এই আন্দোলন এতদিন টিকে আছে কেন? তিনটে ছেলে এদিক ওদিক যাচ্ছে, গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছে। শুভেন্দুর আমাদের ওপরে আস্থা আছে। শুভেন্দু একবার ঘুরে গিয়েছে, তাতেই আন্দোলন এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে।’ ভিডিওতে তাঁকে স্বীকার করতে শোনা গিয়েছে, শুভেন্দু টাকা এবং মোবাইল ফোন দিয়ে গিয়েছেন তাঁদের। কারণ, এই ধরনের কাজ খালি হাতে হয় না।
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কেউ গঙ্গাধরকে বলছেন, ‘দাদা, তোমরা কী লেভেলের কাজ করেছ, বুঝতে পারছ? ধর্ষণ হয় নাই, তাকে ধর্ষণ বলে চালিয়েছ! তোমার বাড়ির বৌকে দিয়ে এই কাজ করাতে পারতে? আমরা তো পারব না। কীভাবে ওদের ‘ব্রেনওয়াশ’ করালেন?’ জবাবে গঙ্গাধর বলেন, ‘শুভেন্দুদার নির্দেশেই আমরা এই কাজ করেছি। উনি আমাদের সাহায্য করেছেন। শুভেন্দুদা বলেছেন, এটা না করলে, তাবড় তাবড় লোকদের গ্রেপ্তার করানো যাবে না। আমরাও ওখানে দাঁড়াতে পারব না।’
ধর্ষণের অভিযোগ লেখাতে কীভাবে রাজি হলেন মহিলারা? গঙ্গাধর বলেন, ‘আমরা যা বলেছি, ওরা শুনেছে। কেউ না করেনি। ওদের বলেছিলাম, যদি আপনারা অভিযোগ না লেখান, তাহলে আপনাদের এই আন্দোলন সফল হবে না। এখানে আপনাদের টিকতেও দেবে না।’ রেখা প্রথমে অভিযোগ দায়ের করার পরে তাঁকে দেখে বাকিরাও সাহস পান বলে জানিয়েছেন গঙ্গাধর। সন্দেশখালির আন্দোলন শুরুর পর সেখানে বিভিন্ন কমিশন গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছিল। তখন আন্দোলনকারী মহিলারা কেউ কেউ ভয় পেয়ে যান বলে জানান গঙ্গাধর। ভিডিওতে গঙ্গাধর দাবি করেছেন, তিনি এবং শান্তনু নামে একজন মিলে সন্দেশখালির সম্পূর্ণ আন্দোলন ধরে রেখেছেন। ভিডিওটি ঘিরে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, গঙ্গাধর কয়াল মণ্ডল সভাপতি নন। কেবল তাঁদের দলের সমর্থক। তিনি মানসিকভাবে সুস্থ নন বলেও দাবি করেছেন বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বিবেক রায়। তাঁর দাবি, এর আগেও ওর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। বছর খানেক আগে একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের লোকজনের হাতে মারধরও খায়।
রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র তরুণজ্যোতি তিওয়ারির বক্তব্য, ‘তৃণমূল সব কিছুতেই সাজানো ঘটনা দেখে। সন্দেশখালির মহিলারা এসে আদালতে তাঁদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন। রেখা পাত্রের অভিযোগের ভিত্তিতে শিবু সর্দারের বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারা দেওয়া হয়েছে। সন্দেশখালির ঘটনাকে কোনওভাবেই তৃণমূল আড়াল করতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেন, ‘ভিডিওটি আমি দেখিনি। কার গলা খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে কথা বলব।’
এ নিয়ে ময়দানে নেমেছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, ‘সন্দেশখালির স্টিং অপারেশনের ভিডিও দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি বললেও কম বলা হবে। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাকে বদনাম করতে বাংলা-বিরোধী বিজেপি যেভাবে পুরোটা সাজিয়েছিল, সেটা প্রত্যেক নাগরিকের দেখা উচিত। এই ঘৃণ্য ঘটনাটি ইতিহাসে সবথেকে বড় আকারে ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতীক হয়ে গেল। লজ্জাজনক।’
I am shocked beyond words to see the SANDESHKHALI STING VIDEO. Every citizen must witness the BANGLA BIRODHI @BJP4India ‘s ORCHESTRATED attempt to DEFAME AND MALIGN WB for their petty political ends.
This abhorrent act epitomizes the GROSSEST ABUSE OF POWER in history.
SHAME! https://t.co/f4HWA97umW
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) May 4, 2024