পুণ্ডিবাড়ি: এ যেন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। নিজের মাকে খুন করে মাটির নীচে পুঁতে রেখেছে ছেলে। এমনই অভিযোগে শুক্রবার উত্তাল হয়ে উঠল পুণ্ডিবাড়ি থানার অন্তর্গত কাঁঠালবাড়ি এলাকা। জানা গিয়েছে, এদিন সকাল থেকেই ওই এলাকার বাসনা সরকার (৭০) নামে বৃদ্ধাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর প্রতিবেশীরা ওই বৃদ্ধার বাড়ি গিয়ে ডাকাডাকি করলেও কোনরকম সাড়া পাননি। বৃদ্ধার শোবার ঘরে খোঁজ করতে গিয়ে প্রতিবেশীরা ঘরের মেঝে খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পান। সেখানে বৃদ্ধার পায়ের জুতো পড়ে থাকতে দেখা যায়। এরপরেই তাঁদের সন্দেহ হলে প্রথমে ঘরের মেঝে খুঁড়ে এবং পরে বাড়ির পাশে থাকা একটি পুকুরে বৃদ্ধার খোঁজ করতে থাকেন। তাতেও খোঁজ না পেয়ে আশেপাশে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি করতে শুরু করেন প্রত্যেকে।
এরপর বৃদ্ধার বাড়ি থেকে আনুমানিক ৫০০ মিটার দূরে ভুট্টাখেতের পাশে জমিতে একটি পায়ের অংশ দেখতে পান প্রতিবেশীরা। এরপরেই খবর দেওয়া হয় পুণ্ডিবাড়ি থানায়। খবর পেয়ে পুণ্ডিবাড়ি থানার ওসি নকুল রায় বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোন। পরবর্তীতে জেলা পুলিশের ডিএসপি হেড কোয়ার্টার চন্দন দাসও ঘটনাস্থলে যান। এরপর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, ওই বৃদ্ধার ছেলে মিঠুন সরকার নিজেই তার মাকে খুন করে দেহ লোপাট করার জন্য ওভাবে বাড়ির অদূরে মাটিতে পুঁতে রেখেছিল। স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধার স্বামী অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। বাড়িতে তিনি আর তাঁর ছেলে থাকতেন। ছেলে প্রায় দিনই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে তার মাকে মারধর করত। অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবারও সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই বৃদ্ধা বাড়ির পাশেই এক নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে টিভি দেখছিলেন। এরপর মিঠুন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে তার মাকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর আর কিছু বোঝা যায়নি। এদিন সকাল থেকে বৃদ্ধাকে দেখতে না পাওয়ায় তার খোঁজ করতে গিয়েই ঘটনাটি চোখে পড়ে স্থানীয়দের। তবে এদিন সকাল থেকেই ওই যুবককে এলাকায় আর দেখা যায়নি বলে জানান স্থানীয়রা। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ জানিয়েছেন, ভুট্টাখেতের পাশ থেকে মাটি খুঁড়ে ওই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।