অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকে পর্যটকদের পাখি দেখানোর পেশাকে বেছে নেওয়া। বক্সার (Buxa) বাসিন্দা কেযা যাচো ডুকপা এভাবে নেশাকে পেশা বানিয়ে বক্সার প্রথম ‘বার্ড গাইড’ (Buxa Bird Guide) হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বক্সা টাইগার রিজার্ভে (Buxa Tiger Reserve) পাখি নিয়ে আলোচনা হোক বা পাখির ছবি তোলার জন্য কোনও পর্যটক আসুক, সব সময় কেযা যাচোর ডাক পড়ে। ‘বার্ড গাইড’ পেশাটির সঙ্গে এতদিন এলাকাবাসীরা তেমন পরিচিত ছিলেন না। এবার সেই ‘অন্য রকম’ জীবিকাকে বেছে নিয়ে কেযা অন্যদের জন্য উপার্জনের রাস্তা খুলে দিয়েছেন। কেযার কাছে বার্ড গাইডের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বক্সা পাহাড়ের বেশ কয়েকজন তরুণ। বৃহস্পতিবার কেযা বলেন, ‘আমি এই পেশায় এসেছি। এই জায়গায় আগে কেউ এই পেশাকে জীবিকা হিসাবে গ্রহণ করেননি। আরও অনেকে এই পেশায় আসুক। গ্রামের তরুণরা তাহলে এর মাধ্যমে উপার্জন করতে পারবে।’
বক্সা ফোর্টে বাড়ি কেযা যাচোর। তবে বক্সার গ্রামগুলোয় ‘কেজং’ নামে তিনি বেশি পরিচিত। ছোটবেলা থেকে তাঁর পাহাড়ের জঙ্গলে ঘোরার অভ্যাস। জঙ্গলের কোন জায়গায় কোন পাখি দেখা যায় সেটা জঙ্গলে গেলেই টের পেতেন। প্রথম দিকে তিনি বক্সার সাধারণ গাইড হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। পর্যটকদের বক্সা ফোর্ট ঘোরানো ছিল তাঁর কাজ। তবে জলপাইগুড়ির পক্ষীপ্রেমী বিশ্বপ্রিয় রাউতের সঙ্গে কেযার পরিচয় হওয়ার পর তাঁর পেশার বদল ঘটে। বিশ্বপ্রিয়’র কাছ থেকে পাখিদের সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য জানতে পারেন। কোন পাখির কী নাম, কোনটার গুরুত্ব কী সেই বিষয়ে কেযা বিস্তারিত জানার চেষ্টা শুরু করেন। কেযার কথায়, ‘বিশ্বপ্রিয় আমাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান। আবার কয়েকটা বইও দিয়েছিলেন। সেগুলো দেখে পাখিদের সম্পর্কে আরও জানতে পারি।’
বক্সার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে আগে থেকে জঙ্গল চেনা ছিল। সেটা তাঁর কাজে বাড়তি সুবিধা দেয়। কেযা জানান, বিভিন্ন পাখি বিভিন্ন সময় জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। সঠিক জায়গা এবং সময় জানা বিশেষভাবে দরকার। তা না হলে পাখির হদিস পাওয়া যায় না। অন্যদিকে তিনি এর পাশাপাশি কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। ওই সংগঠন হর্নবিল নিয়ে বিভিন্ন কাজ করে। ওই সংস্থাকে গবেষণার কাজে কেযা সহযোগিতা করেন। কেযা বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এলাকাবাসীকে সাপ নিয়ে সচেতনতা করেন।