নাগরাকাটাঃ মণ্ডপের কাছাকাছি চলে এল একপাল হাতি। তা দেখে হুলুস্থুল বেঁধে যায় উপস্থিত দর্শনার্থীদের মধ্যে। যে যার মতো দৌড়ে পালাতে শুরু করেন। খবর পেয়ে বন দপ্তরের ডায়না রেঞ্জের কর্মীরা এসে বুনোগুলিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় রোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটে নাগরাকাটার কাঠালধূড়ায়। রেঞ্জার অশেষ পাল বলেন, পুজোর সময় বাড়তি সতর্কতা গ্রহন করা হয়েছে। বনকর্মীরা সর্বত্র নজর রেখে চলেছেন। পুজো মন্ডপের সামনে যে হাতিগুলি চলে এসেছিল সেগুলিকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেওয়া হয়।
কাঠালধূড়া চা বাগানে ফি বছরই ঘটা করে পুজো হয়। এবারও এর কোন অন্যথা হচ্ছে না। এলাকাটি ঘাসমারি বস্তী লাগোয়া। সেখানকার প্রাথমিক স্কুলের মাঠে পুজো হচ্ছে। যেখানে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে তার পেছনে ও সামনে চা বাগান। অন্তত ৪০ টি হাতির একটি দল কাঠালধূড়া বাগানের ভেতরের রাস্তা দিয়ে মণ্ডপের পেছনে চলে আসে। সেসময় দেবীর বোধন পর্বের আচার অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছিল। ফলে দর্শনার্থীও ছিলেন বেশ কিছু। মণ্ডপের মাঠ থেকেই হাতি দেখতে পেয়ে নিমেষের মধ্যে সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দেন অনেকেই। বন দপ্তর এসে পটকা ফাটিয়ে হাতিগুলিকে সরিয়ে দেয়। রাজু নার্জিনারি নামে পুজো কমিটির এক কর্তা বলেন, কিছু লোক হাতি দেখে পালিয়ে যায়। অনেকে আবার হাতি তাড়ানো দেখতে বনকর্মীদের পিছু পিছু যাওয়া শুরু করে। একটা সময় মণ্ডপ কার্যত ফাঁকাই হয়ে যায়। এমন অভিজ্ঞতা এর আগে কখনও হয় নি।
বন দপ্তর সূত্রেই জানা গেছে বর্তমানে প্রতিদিনই হাতিদের দল সন্ধ্যা ঘনালেই ডায়নার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে চলে আসছে। একাধিক উপদলে বিভক্ত হয়ে সেগুলি নানা স্থানে হানা দিচ্ছে। একটি দলের ডেস্টিনেশন হয়ে দাঁড়িয়েছে লুকসান চা বাগান হয়ে প্রতিবেশী দেশ ভুটান। সেখানকার ধান খেত সাবাড় করে ভোর বেলা ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক টপকে গ্রাসমোড় চা বাগানের চার নম্বর গেট ধরে জঙ্গলে ঢুকছে। রাস্তা পারাপারের সেই দৃশ্য দেখতে আবার সাত সকালে ওই স্থানটি কার্যত পর্যটনস্থলে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। এদিন পুজো মণ্ডপের সামনে যে হাতিগুলি আসে সেগুলি অন্য আরেকটি দলের। লাগোয়া রাবার গবেষণা কেন্দ্র হয়ে বুনোগুলিকে ডায়না রেঞ্জের বনকর্মীরা জঙ্গলের দিকে ফেরত পাঠান।