মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, বীরপাড়া: বীরপাড়া থানার সিংঘানিয়া চা বাগানে খুন হয়েছিলেন ইন্দ্রদেব সুরি। তারপর ৩ বছর ৫ মাস পেরিয়ে গিয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে যার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, সেই শাহবাজ আলি জেল হেপাজত থেকে ছাড়া পেয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছে। তবু এখনও ঘরে ফিরতে পারছেন না শাহবাজের বাবা সিরাজ আলি ও তার দিদি নেহার খাতুন। অভিযোগ, মৃত ইন্দ্রদেবের পরিজনরা তাঁদের এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছেন না।
শাহবাজের বাড়ির লোকজন বীরপাড়া থানার পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। শ্বশুরবাড়িতে কিছু সমস্যার জেরে শুক্রবার বাপের বাড়ি ফেরেন নেহার। শনিবার দুপুরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে জানিয়ে দেয়, রবিবার সকাল ১০টার মধ্যে বাপের বাড়ি ছাড়তে হবে। অসহায় নেহারের উক্তি, ‘পুলিশ আমাকে বাড়ি ছাড়তে চাপ দিচ্ছে। আমি আত্মহত্যা করব।’ আর পুলিশের ব্যাখ্যা, পুরোনো সেই খুনের ঘটনার জেরে অশান্তি হতে পারে। তাই এই পদক্ষেপ।
ওই বাড়িতে গিয়ে পুলিশ যা বলেছে, তার একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক পুলিশ আধিকারিক মহিলাকে বলছেন, ‘লিখে দিন, এখানে থাকলে নিজের দায়িত্বে থাকবেন।’ নেহার পুলিশকে জানান, দাম্পত্য কলহের জেরে তিনি শ্বশুরবাড়িতে টিকতে না পেরে ডিভোর্সের মামলা দায়ের করেছেন। তাই এখানে চলে এসেছেন। ওই পুলিশ অফিসারের জবাব, ‘ডিভোর্স ফাইল করা হলেই সেটা ডিভোর্স নয়।’
বীরপাড়া থানার ওসি নয়ন দাস অবশ্য বলছেন, ‘ঠিক কী কথা হয়েছে, খোঁজ নিচ্ছি।’
সিংঘানিয়ার ওই মহল্লারই বাসিন্দা মাদারিহাটের বিধায়ক তথা বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির সভাপতি মনোজ টিগ্গা। সেখানেই তাঁর পৈতৃক ভিটে। ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর, খুনের ঘটনার পরদিন অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় নিহতের প্রতিবেশীরা। অভিযুক্তের পরিবারও মনোজের প্রতিবেশী। এ ব্যাপারে মনোজের কোনও ভূমিকা নেই কেন, সে প্রশ্ন উঠেছে। তবে মনোজের বক্তব্য, ‘বাড়ি ফেরার আবেদন নিয়ে আমার কাছে কেউ আসেনি। তাই বিষয়টি জানি না।’
নেহারের অভিযোগ, তাঁর বাবা সিরাজ এখন মাদারিহাটের একটি লাইন হোটেলের কর্মী। সেখানেই থাকেন। বাড়ি ফেরার উপায় নেই।