নয়াদিল্লি: রবিবার দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা রাজীব গান্ধীর জন্মদিবসে নতুন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। এই কমিটিতে বাংলা থেকে স্থান পেয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি৷ অধীর চৌধুরী আগেও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ছিলেন৷ কমিটিতে নতুন মুখ কেরালার কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর, অসমের সাংসদ গৌরব গগৈ, রাজস্থানের প্রভাবশালী নেতা শচীন পাইলট, সংখ্যালঘু নেতা সৈয়দ নাসির হুসেন এবং জেএনইউ-র প্রাক্তন ছাত্র নেতা কানহাইয়া কুমার৷ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গের নেতৃত্বাধীন ৩৯ সদস্যের কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে থাকছেন সনিয়া-রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী৷ সঙ্গে থাকছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও৷
রাজনৈতিক মহলের মতে নব্যগঠিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে(সিডব্লুসি) দীপা দাশমুন্সির অন্তর্ভুক্তি খুবই তাত্পর্যপূর্ণ৷ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা এই প্রথম কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য মনোনীত হয়েছেন৷ তাঁর স্বামী প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি দীর্ঘদিন সিডব্লুসির সদস্য ছিলেন৷ বিগত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দলের হয়ে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন দীপা৷ হিমাচল এবং ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর ভূমিকা প্রবলভাবে প্রশংসিত হয়৷ এর পরেই কংগ্রেস তাকে তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে৷ এবার পারফরমেন্সের নিরিখেই শতাব্দী প্রাচীন দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটির সদস্য হলেন রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ৷ দীপা জানিয়েছেন, ‘কংগ্রেস নেতৃত্ব আমার প্রতি যে আস্থা রেখেছেন, আমি তার জন্য কৃতজ্ঞ৷ এই প্রত্যাশা পূরণের সর্বাঙ্গীন চেষ্টা আমি করব।’
তাত্পর্যপূর্ণ হল, মল্লিকার্জুন খড়গে শতাব্দী প্রাচীন দলের সভাপতিত্ব গ্রহণ করার পরে যেভাবে জোর গলায় জানিয়েছিলেন যে তিনি উদয়পুরের চিন্তন শিবিরে গৃহীত সিদ্ধান্ত কার্যকর করবেনই, সেই ঘোষণা কিন্তু এদিন বাস্তবে পরিণত হয়নি৷ উদয়পুরের চিন্তন শিবিরে কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি সিডব্লুসি বা কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের ৫০ শতাংশের বয়স হবে পঞ্চাশের নীচে৷ রবিবার কংগ্রেস সদর দফতর থেকে যখন ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের নাম জানানো হল তখন দেখা গেল উদয়পুরের চিন্তন শিবিরে গৃহীত সিদ্ধান্ত কাগজেই থেকে গিয়েছে৷ নতুন সিডব্লুসির ৫০-র নিচে বয়েস এমন সদস্য গুটিকয়েক মাত্র৷ মল্লিকার্জুন খাড়গে কংগ্রেস সভাপতি পদে বসার পরেই কংগ্রেসের পুরোনো ওয়ার্কিং কমিটি ভেঙে নতুন করে গড়ার কথা জানানো হয়েছিল৷ রবিবার সেই কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগলো দশ মাস৷ রাজীব গান্ধীর জন্মতিথিতেই শেষ পর্যন্ত প্রকাশ্যে এল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির ঘোষণা।
উল্লেখ্য ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে যখন গড়ে উঠেছে ইন্ডিয়া জোট শিবির, তখনই আরও একবার কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল অন্যতম প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসকে৷ রবিবার রাজীব জয়ন্তী উপলক্ষে দিল্লিতে সংসদের সেন্ট্রাল হলে তাঁর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণে হাজির হন দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী, কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে, কপিল সিব্বল সহ একাধিক শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্ব। উল্লেখ্যনীয় রাজীব জয়ন্তী উপলক্ষে কংগ্রেসকে সদর্থক বার্তা দিতে দলীয় সাংসদ এবং রাজ্যের প্রাক্তন আমলা জহর সরকারকে সেন্ট্রাল হলে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ মতো জহর সরকার এদিন সেন্ট্রাল হলে উপস্থিত হন এবং মমতার দূত হিসেবে রাজীব প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীকে দেন মমতার বার্তাও। এও জানা গেছে, জহর সরকারের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সৌজন্য বার্তা প্রেরণ করেন সনিয়া গান্ধীও।