শিলিগুড়ি: স্বাস্থ্যবিমার পর এবার বই বিতর্কে জড়ালেন শিলিগুড়ি কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি জয়ন্ত কর। কলেজের বই কেনার জন্য কোটেশনে অংশ নিয়েছিল তাঁরই পুস্তক বিপণি। শুধু তাই নয়, ‘পারচেজ কমিটি’-র অনুমোদনে পাশও হয়েছে তাঁর কোটেশন। প্রথম পর্যায়ে কলেজের তরফে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার টাকার বইয়ের বরাতও দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
প্রভাব খাটিয়েই তিনি এ কাজ করেছেন বলে রব উঠেছে শিক্ষক মহলে। বারবার বিতর্কে জড়িয়ে গেলেও জয়ন্ত অবশ্য দমতে নারাজ। তাঁর সাফাই, ‘যদি প্রভাব খাটাতাম তাহলে অনেক বেশি টাকার টেন্ডার পেতাম। বাংলামাধ্যমের বেশ কিছু বই কলেজ পাচ্ছিল না বলে আমাকে জানানো হয়। তখন আমি ২৩ শতাংশ ছাড়ে বইয়ের কোটেশন দিয়েছিলাম। কলেজ থেকে বলা হয়েছিল বলেই কোটেশন দিয়েছি। এই বই বিক্রি করে আমার কোনও লাভ হয়নি।’
এ তো গেল লাভ-লোকসানের ব্যাপার। কিন্তু পরিচালন সমিতির সভাপতি হয়ে কলেজের সঙ্গে কি তিনি লাভজনক কোনও ব্যবসা করতে পারেন, উঠেছে এমন প্রশ্নও। কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডঃ মলয় করঞ্জাইয়ের কথায়, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষের উচিত সভাপতির বুকস্টল থেকে বই না নেওয়া। পাশাপাশি সভাপতিরও এধরনের কোটেশনে অংশগ্রহণ না করা উচিত। সেক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।’
বিতর্ক যেন কিছুতেই তাঁর পিছু ছাড়ে না। কখনও ইউনিফর্ম আবার কখনও পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যবিমা। এবার তাঁর নাম জড়াল বই বিক্রিতে। জানুয়ারি মাসে কলেজের গ্রন্থাগারের জন্য বার্ষিক বই কেনার জন্য ই-টেন্ডারের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে নিজের বুকস্টলের নামে কোটেশন দেন জয়ন্ত। কলেজের গ্রন্থাগারিক সন্দীপ দাস বলছেন, ‘বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় অনেকেই কোটেশন পাঠিয়েছিলেন। সভাপতিও কোটেশন পাঠিয়েছিলেন। তবে পুরো বিষয়টি কলেজের গ্রন্থাগারের জন্য বই কেনার যে কমিটি রয়েছে তাঁরা ঠিক করেছেন। তবে প্রথমবার এই বুকস্টল থেকে কলেজের গ্রন্থাগারের জন্য বই কেনা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার টাকার মতো বই জয়ন্তবাবু দিয়েছেন।’
প্রতিবছর কলেজে গ্রন্থাগারের জন্য বই কেনা হয়ে থাকে। সেখানে অর্থনীতি, এডুকেশন, ভূগোল, ইতিহাস, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের বইয়ের জন্য কোটেশন দিয়েছিলেন জয়ন্ত। যদিও এব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ সুজিত ঘোষের সাফাই, ‘বই কেনার পুরো বিষয়টি কলেজে যে কমিটি রয়েছে তারা ঠিক করেছে।’ কিন্তু অধ্যক্ষকে এড়িয়ে পারচেজ কমিটি সব ঠিক করেছে, এমন যুক্তিতে মুচকি হাসছেন অধ্যাপক-অধ্যাপিকারাই।