জ্যোতি সরকার, জলপাইগুড়ি: প্রথমে ইন্দিরা গান্ধি, তারপর রাজীব দর্শন। আর এবার গান্ধি পরিবারেরই আর এক সদস্য রাহুল গান্ধিকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করে দারুণ খুশি তিন প্রবীণ। এঁরা হলেন কাদোবাড়ি গ্রামের ৭৫ বছর বয়সি দীনবন্ধু বর্মন, হেমকুমারী গ্রামের ৬৯ বছরের ফজলেয়ার রহমান এবং ৮৮ বছর বয়সি জলপাইগুড়ি সংলগ্ন তিস্তা নদীর চর এলাকার বাসিন্দা দেবনারায়ণ মাহাতো। রাহুল গান্ধির মধ্যে তাঁর পিতা রাজীবের সব গুণই রয়েছে বলেও তাঁরা মন্তব্য করেন।
রাহুল দর্শনে রবিবার কাকভোরেই বাড়ি থেকে রওনা হয়েছিলেন তিন প্রবীণই। টোটো ধরে সকাল ৯টার মধ্যেই জলপাইগুড়ি শহরে পৌঁছে যান কাদোবাড়ির দীনবন্ধু বর্মন। তবে রাহুল গান্ধির দর্শন পান বেলা ২টা ১৫ মিনিটে। বাংলাদেশ সীমান্তের হেমকুমারী থেকে টোটো ধরে হলদিবাড়ি এবং হলদিবাড়ি স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে জলপাইগুড়িতে আসেন ফজলেয়ার রহমান। তিস্তা চরের দেবনারায়ণ মাহাতো এক দুর্ঘটনায় তাঁর বাঁ পা খুইয়েছেন। ক্রাচে ভর দিয়েই তিনি সকাল ১১টার মধ্যে জলপাইগুড়ি শহরের পিডব্লিউডি মোড়ে এসে উপস্থিত হন। খুব কাছ থেকে এদিন রাহুল গান্ধির দর্শন পাওয়ায় এবং তাঁদের দিকে চেয়ে রাহুল হাত নাড়ানোয় দারুণ খুশি তাঁরা সকলেই।
দীনবন্ধু বর্মন বলেন, ‘জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মাঠে ইন্দিরা গান্ধিকে দেখেছিলাম। ১৯৮৭ সালে যখন রাজীব গান্ধি জন পরিক্রমায় বেরিয়েছিলেন, সে সময় জলপাইগুড়িতেই রাজীবকে দেখেছি। তার ৩৭ বছর পর সেই জলপাইগুড়িতেই রাজীব-পুত্র রাহুলকে দেখতে পেলাম। সত্যিই সৌম্য পুরুষ। এত ভিড়ের মধ্যেও আমাদের মতো বয়স্ক নাগরিকদের দিকে চোখ পড়তেই তিনি হাত জোড় করে নমস্কার জানিয়েছেন। আমি সত্যিই অভিভূত।’
জলেয়ার রহমান এর কথায়, ‘গান্ধি পরিবারের তিন প্রজন্মকেই দেখার সৌভাগ্য অর্জন করলাম। হাড়-হিম করা ঠান্ডার মধ্যে এতটা দূর আসা বৃথা হয়নি। ভিড়ের মধ্যেই রাহুলজি বলে চিৎকার করেছিলাম। আমাকে দেখে উনি হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’ ভোলানাথ সেন পূর্তমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৭৬ সালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবে পূর্ত দপ্তরে যোগ দিয়েছিলেন দেবনারায়ণ মাহাতো। সে সময় খুব কাছ থেকে জলপাইগুড়ির কংগ্রেস নেতাদের দেখে জাতীয় কংগ্রেসের ওপর একটা দুর্বলতা তৈরি হয়েছিল তাঁর। তিনি জানান, ইন্দিরা গান্ধি ও রাজীব গান্ধিকে দেখবার পর বহুদিনের ইচ্ছে ছিল রাহুল গান্ধিকে দেখার। সে ইচ্ছে পূরণ হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত।’
এদিন তিন প্রবীণই একই সুরে জানান, তাঁরা যেন রাহুল গান্ধির মধ্যে তাঁর পিতা রাজীব গান্ধির সব গুণই দেখতে পেয়েছেন। রাজীবের মতোই রাহুলকেও বছর ৫০-এর এক ছটফটে তরুণ বলেই মনে হয়েছে তাঁদের।