তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী রইল শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুল। যা কোনও দিন কেউ শোনেননি, তাই হল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাকে ঘিরে।
কী ঘটনা? শুনলে চমকে উঠবেন। তরুণ পরীক্ষার্থী অর্থনীতি পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্রের বদলে প্রশ্নপত্র জমা দিয়ে চলে গেল। এখানেই শেষ হলে হয়তো ভালো হত। তা হয়নি। পরীক্ষার্থী বাড়ি নিয়ে চলে যায় উত্তরপত্রটি।
এই নাটকীয় ঘটনা বুঝতেই পারলেন না পরীক্ষকরা। অনেক পরে যখন তা আবিষ্কার হল, তা নিয়ে ধুন্ধুমার স্কুলে। কার ভুল? ছাত্রের না পরীক্ষকের? এনিয়ে মঙ্গলবার টানাপোড়েন চলল দীর্ঘসময়। উচ্চমাধ্যমিকে শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলে সিট পড়েছিল শিলিগুড়ি বরদাকান্ত হাইস্কুলের ছাত্রদের। সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় বরদাকান্তের শিক্ষকদের সঙ্গেও। তোলপাড় শুরু হয় ওই স্কুলেও। ঘণ্টা দেড়েক পরে সংশ্লিষ্ট ছাত্রের বাড়ি গিয়ে উদ্ধার করে আনা হয় উত্তরপত্র। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন দুই স্কুলের শিক্ষকরা।
স্বাভাবিক কারণেই তাঁরা কেউই ছাত্রের নাম বলছেন না। তবে ছাত্রটিকে ‘আরএ’ করা হয়েছে। যদিও পরের পরীক্ষা দিতে পারবে সে। শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কনভেনার রাম ছেত্রী বলেন, ‘পরীক্ষা শেষ হয় ১টায়। আমি ঘটনাটি জানতে পারি দুপুর ২টো ২২-এ। তারপর কাউন্সিলের সঙ্গে কথা বলে উত্তরপত্র বাড়ি থেকে আনতে বলি। ছেলেটির এই পরীক্ষার ফল নিয়ে সিদ্ধান্ত সব পরীক্ষা শেষে জানা যাবে।’
সমস্যা তো আপাতত মিটল, কিন্তু প্রশ্ন উঠে গেল অনেক। এক, কী করে শিক্ষক এবং ছাত্রের তরফে এই ভুল হল। দুই, অভিভাবকরাও কেন পরীক্ষা শেষে ছাত্রের প্রশ্নপত্র মেলাতে যাননি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হাইস্কুলের এক শিক্ষক বলছিলেন, ‘পরীক্ষার চাপে ছাত্রের ভুল হতেই পারে। কিন্তু পরীক্ষক এই ভুল করলেন কী করে? যদি প্রথমে ভুল হয়ে যায়, তাহলে তা এক মিনিটের মধ্যে ধরে ফেলার কথা। সেটা হল না কেন ভেবে আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি।’
ঘটনা দেখে শিলিগুড়ির শিক্ষামহলও আশ্চর্য। অনেক শিক্ষককেই বলতে শোনা গেল, এধরনের ঘটনা কোনও পরীক্ষাতেই এ শহর দেখেনি।