ভাস্কর শর্মা, আলিপুরদুয়ার: ভোট যে বড় বালাই! ভোটের গণ্ডি পার হতে গিয়ে রাম-হনুমানের শরণ নিয়েছিলেন নেতারা। রামনবমীতে প্রথম সারিতে অবশ্যই ছিলেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু এখন এখানে ভোট শেষ। তাই রামের প্রধান উপাসক হনুমানকে নিয়ে তেমন আর কোনও উদ্দীপনা চোখে পড়ছে না। আজ, মঙ্গলবার হনুমান জয়ন্তী (Hanuman Jayanti) উপলক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে তেমন কোনও আয়োজন করা হয়নি। তবে অরাজনৈতিকভাবে আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলাজুড়েই একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
রাজনৈতিক মহল সূত্রে খবর, এবার প্রথম পর্বের লোকসভা ভোটের একদিন আগে ছিল রামনবমী। রাজনৈতিকভাবে এর ফায়দা তুলতে পিছপা হয়নি বিজেপি। আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন জায়গাতেই অরাজনৈতিক ব্যানারে রামনবমী উদযাপন করতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতাদের। ওইদিন আলিপুরদুয়ারে ও ফালাকাটায় অরাজনৈতিকভাবে বিশাল মিছিল হয়েছিল। তবে মিছিলে উজ্জ্বলভাবে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতারা। ফালাকাটাতে বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মন মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গোটা জেলার বিভিন্ন জায়গায় হওয়া রামনবমীর মিছিলে অগ্রভাগে ছিলেন বিজেপি নেতারা। এবার অবশ্য ভোট শেষ। রামের প্রধান উপাসক হনুমানজির আজ জন্মজয়ন্তী। কিন্তু রামনবমী আয়োজন নিয়ে যেমন উদ্দীপনা ছিল হনুমান নিয়ে কিন্তু তা হচ্ছে না বলেই রাজনৈতিক মহল জানিয়েছে।
বিজেপির (BJP) ফালাকাটা টাউন মণ্ডলের সভাপতি চন্দ্রশেখর সিনহার কথায়, ‘হনুমান জয়ন্তী নিয়ে আমাদের কোনও অনুষ্ঠান নেই। যে কেউ অবশ্য ঘরোয়াভাবে অনুষ্ঠান বা পুজো করতেই পারেন।’
বিজেপি হনুমান জয়ন্তী নিয়ে তেমন উদ্দীপনা না দেখালেও শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস কিন্তু পিছিয়ে নেই। আলিপুরদুয়ার শহরে তারা অবশ্য অরাজনৈতিক ব্যানারে আজ হনুমান জয়ন্তীর আয়োজন করেছে। আবার আলিপুরদুয়ার কালীবাড়ি এলাকায় হনুমানজির পাথরের মূর্তি স্থাপন উপলক্ষ্যে সোমবার শোভাযাত্রা করা হয়। এদিন ওই শোভাযাত্রার অগ্রভাগে তৃণমূল নেতাদের দেখা গিয়েছে। খোদ তৃণমূল নেতা তথা আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে এবং তৃণমূলের টাউন ব্লক সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়কে মিছিলের নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে। আবার দীপ্ত নিজেও মঙ্গলবার হনুমান জয়ন্তীর আয়োজন করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই রাম নিয়ে বিজেপি ভোটের আগে মেতে উঠেছিল। আর এখন ভোট শেষে হনুমানকে নিয়ে মেতে উঠতে চলছে শাসকদল। যদিও এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করেছেন তৃণমূল নেতারা।
তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার টাউন ব্লক সভাপতি দীপ্ত বলেন, দেবদেবীদের নিয়ে বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করে। তাই ভোটের আগে এবার রামকেও রাজনৈতিক হাতিয়ার করেছিল তারা। আর ভোট শেষ হতেই বিজেপির ভক্তি উধাও। কিন্তু আমরা আজ হনুমান জয়ন্তী পালন করব। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।
গত কয়েক বছর ধরেই রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তী নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলাজুড়েই একটা উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীতে বিশাল মিছিলও বের করা হয়। গত বছরও আলিপুরদুয়ার ও ফালাকাটায় মিছিল বের হয়। এই মিছিলের অগ্রভাগে অবশ্যই ছিলেন বিজেপি নেতারা। এবার আবার গত বছরের তুলনায় বিভিন্ন সংগঠনের নামে বিশাল আকারে রামনবমীর শোভাযাত্রা করা হয়। সেখানেও বিজেপি নেতাদের দেখা গিয়েছে। গত বছর অবশ্য তৃণমূল নেতাদের রাম বা হনুমান জয়ন্তী পালন করতে দেখা যায়নি। কিন্তু এবার হনুমান জয়ন্তীতে তাদের দেখা যাচ্ছে।