নীহাররঞ্জন ঘোষ, মাদারিহাট: নেহাত চিতাবাঘ (Leopard) মানুষের ভাষায় আর্তনাদ করতে পারে না, তাই। তবে কার পাল্লায় পড়েছিল, তা নিশ্চয় হাড়ে হাড়ে বুঝেছে। তাও আবার যে সে হাড়ে নয়, একেবারে চোয়ালের হাড়ে। জলদাপাড়া নর্থ রেঞ্জের নর্থ বিটের কাছের ঘটনা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া এলাকা থেকে গোরু আনতে গিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) মধ্য মাদারিহাটের (Madarihat) পিংকি চৌপথির অসিত মণ্ডল। হঠাৎই অসিতের মুখোমুখি পড়ে যায় একটি চিতাবাঘ। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঝাঁপিয়ে পড়ে বুনো। থাবা বসিয়ে দেয় অসিতের ডান হাতে। আর গলায় কামড় বসানোর চেষ্টা করে। অসিত বুঝে যান, একবার যদি গলায় কামড় বসিয়ে দেয়, তবে আর তাঁর বাঁচার কোনও আশাই নেই। মরিয়া অসিত নিজেকে বাঁচাতে বাঁ হাত দিয়ে চিতার মুখে ঘুসি বসিয়ে দেন। তাতেও একেবারে ছাড় দেয়নি বুনো। ঘুসি খেয়ে চিতাটি অসিতের গলার বাঁদিকে থাবা বসিয়ে দেয়। বাঁ হাতে আঁচড় বসিয়ে দেয়। এরপর অসিত চিতাবাঘের মুখে দ্বিতীয়বার ঘুসি মারতেই পালিয়ে যায় সে।
বেঁচে ফিরেছেন ঠিকই, তবে ঘটনার পরও ঘোর কাটছে না অসিতের। জানালেন, কিছু বোঝার আগেই আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘটি। আমার সঙ্গে প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে লড়াই চলে। নিজেকে বাঁচাতে বাঁ হাত দিয়ে চিতাবাঘের মুখে দুইবার ঘুসি চালাই। এরপর সেটি পালিয়ে যায়।
এদিকে, জখম অবস্থায় অসিতকে উদ্ধার করে মাদারিহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান বাড়ির লোকজন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। অসিতের বাবা খগেন মণ্ডলের কথায়, ‘চিতাবাঘের ধারালো নখের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছে ছেলের শরীরের বহু জায়গা।’ আপাতত অসিত শয্যাশায়ী।
জলদাপাড়া নর্থ রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার রামিজ রজার ঘটনার কথা শুনেছেন। তবে তাঁর কথায়, ঘটনাটি জঙ্গলের সংরক্ষিত এলাকার ভেতরে হয়েছে। সেইজন্য চিকিৎসার খরচ দেওয়া হবে না।