ওদলাবাড়ি: কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক (পিএমজিএসওয়াই) যোজনায় দুর্নীতির (Corruption) অভিযোগ উঠল। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল ঘনিষ্ঠ পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনৈতিক পন্থা অনুসরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এব্যাপারে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ডব্লিউবিএসআরডিএ)-র উত্তরবঙ্গ সার্কেলের আধিকারিকদের কাছে টেন্ডার (Tender) প্রক্রিয়ার টেকনিকাল বিড ‘রিভিউ’র লিখিত দাবি জানাল দুই ঠিকাদারি সংস্থা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (Superintendent Engineer) ধ্রুবজ্যোতি মজুমদার জানিয়েছেন, টেকনিকাল বিড স্ক্রুটিনি (Scrutiny) প্রক্রিয়া জারি রয়েছে। তৃণমূলের মাল গ্রামীণ ব্লক কমিটির সভাপতি সুশীলকুমার প্রসাদ স্পষ্ট জানান, টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কে কাজ পাবেন, কে পাবেন না, এ বিষয়ে তৃণমূলের কোনও ভূমিকা নেই।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ডব্লিউবিএসআরডিএ-র উত্তরবঙ্গ সার্কেল থেকে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছিল। এই প্রক্রিয়ার প্রধান ধাপ টেকনিকাল বিড। বিড উত্তীর্ণের পর আর্থিক বিড খোলা হয়। সর্বনিম্ন দর অনুযায়ী কে কাজ পাবেন তা নির্ধারিত হয়। এক্ষেত্রে দরপত্রের প্রথম তিন ক্রমিক নম্বর নিয়ে অভিযোগ তুলেছে টেকনিকাল বিড স্ক্রুটিনিতে বাতিল হওয়া শিলিগুড়ির আরপি ইনফ্রাপ্রোজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেড ও ওদলাবাড়ির ব্রতীন সিকদার। দরপত্রের সিরিয়াল নম্বর ১ এবং ২-এর কাজ যথাক্রমে রানিচেরা চা বাগান মোড় থেকে সাইলি চা বাগান পর্যন্ত ৮.৯৩৬ কিমি পিএমজিএসওয়াই সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ। এজন্য প্রস্তাবিত খরচ পাঁচ কোটি ২৩ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। দ্বিতীয় কাজটি রানিচেরা চা বাগানের বালাবাড়ি ডিভিশন থেকে ডামডিম বাজার পর্যন্ত ৪.৯২৪ কিমি পিএমজিএসওয়াই সড়কের। এই কাজের প্রস্তাবিত খরচ দু’কোটি ২১ লক্ষ টাকার সামান্য বেশি। আর ৩ নম্বর সিরিয়ালের কাজটি ক্রান্তি ব্লকের আনন্দপুর চা বাগানের ৪.৯০ কিমি রাস্তা সংস্কারের জন্য এক কোটি ১১ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এই তিন কাজ নিয়ে রাজেশ ও ব্রতীনের বক্তব্য, ‘অনলাইন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় এখন আর কোনও তথ্য গোপন থাকছে না। আমরা লক্ষ্য করেছি, টেকনিকাল ইভ্যালুয়েশনের সময় দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া অন্য বিডারদের পেশ করা তথ্য বেশ কিছু অসংগতি রয়ে গিয়েছে। যেগুলি সংশ্লিষ্ট সরকারি কমিটি ইচ্ছাকৃত এড়িয়ে যাচ্ছে। নীতিগতভাবে এটি মানা যায় না।’ এর প্রেক্ষিতেই টেন্ডার প্রক্রিয়ার নিয়মকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার চক্রান্তের অভিযোগে সরব হন রাজেশ ও ব্রতীন। তাঁদের দাবি, নতুন করে সবার টেকনিকাল বিড ফের খতিয়ে দেখা হোক। তাঁদের দাবি, বিভাগীয় আধিকারিক ও পছন্দের ঠিকাদারদের (Contractor) আঁতাতের অভিযোগ তুলে ইচ্ছে করে অযৌক্তিক বেশ কিছু আইটেম (Item) টেন্ডার এস্টিমেটে ঢুকিয়ে কাজগুলির প্রস্তাবিত ব্যয়বরাদ্দও বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। এব্যাপারে তদন্তের (Investigation) দাবি জানিয়ে জেলা শাসকের কাছেও একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।