খড়িবাড়ি: প্রশাসনের চোখের সামনেই খড়িবাড়িতে জাতীয় সড়কের পাশে বেপরোয়াভাবে চলছে পুকুর ভরাট। অথচ প্রশাসন কিছুই জানে না। পুকুর ভরাট করে চড়া দামে জমি বিক্রির ছক ভেস্তে দিল উত্তরবঙ্গ সংবাদ। স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসন চোখ বন্ধ করে থাকলেও কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ কোনওভাবেই জলাশয় কিংবা পুকুর ভরাট করা যাবে না। কিন্তু সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রশাসনের একাংশের মদতে খড়িবাড়ির পশ্চিম কেশরডোবায় ৩২৭ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বেপরোয়াভাবে চলছে এক বিঘার একটি পুকুর ভরাট। উত্তরবঙ্গ সংবাদ-এর নজরে আসে বিষয়টি। খবর করতে গেলে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক বিঘার এই পুকুরটি স্বর্গীয় বিমল সরকারের। বিমলবাবুর দুই ছেলে। একজন নকশালবাড়ির একটি হাইস্কুলের শিক্ষক। অপর ছেলের নাম ভূপেন্দ্রনাথ সরকার ওরফে টুপন। জমির জাল দলিল তৈরি করে বিক্রির অভিযোগে সম্প্রতি ভূপেন্দ্রকে জেল খাটতে হয়। অভিযোগ, ভূপেন্দ্রর নেতৃত্বেই চলছে বেপরোয়া পুকুর ভরাট। নদী থেকে অবৈধভাবে বালি ও মাটি ট্র্যাক্টরে এনে চার-পাঁচদিন ধরে চলছে পুকুর ভরাটের কাজ। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান কিংবা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর কেন উদাসীন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুকর ভরাটের জেরে জল নিকাশির সমস্যা বাড়বে। খবর করতে গিয়ে মাটি ভরাটের সময় ক্যামেরায় ধরা পড়ে যায় একটি ট্র্যাক্টর। চালক জানান, মালিকের নির্দেশে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। কোনও রয়্যালটি ছাড়াই নদী থেকে বালি ও মাটি তোলা হচ্ছে।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ কিশোরীমোহন সিংহ। তিনি এসেই গোটা এলাকা সরেজমিনে দেখে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক ও খড়িবাড়ি থানার ওসির সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে আসে খড়িবাড়ি পুলিশ। পুলিশ অভিযুক্তের বাড়ি গেলে দেখা যায়, অভিযুক্তরা বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়েছে। খড়িবাড়ি পুলিশ কাজ বন্ধ করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ কিশোরীমোহন সিংহ বলেন, ‘সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পুকুর ভরাট হচ্ছে। কোনও অনুমতি নেই।’ আইন অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।