অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: পঞ্চায়েত ভোটে যে স্বচ্ছ এবং নতুন মুখের ওপর ভরসা রাখবে দল, সেটা বারবার উঠে এসেছে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছ থেকে। প্রার্থী তালিকা বের হওয়ার পর সেটার প্রমাণও কিছুটা মিলেছে। আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদে নতুন মুখ তুলে আনার চেষ্টা করেছে তৃণমূল। কিছুটা একই ছবি বিজেপির প্রার্থী তালিকার ক্ষেত্রেও। তবে রাজ্যের শাসক ও প্রধান বিরোধী দলকে পিছনে ফেলে নতুন, পুরোনো মুখের প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে চমক দিয়েছে বাম ও কংগ্রেস।
আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সব দলের প্রার্থীদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী কংগ্রেস জেলা পরিষদের ১ নম্বর আসন থেকে ভোটে লড়ছেন অমৃতা মহালি। মাত্র ২৩ বছর বয়স কংগ্রেসের ওই প্রার্থীর। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি বয়সের প্রার্থী দিয়েছে বামেরা। আরএসপির টিকিটে জেলা পরিষদের ১৭ নম্বর আসনে লড়াই করছেন ৬৬ বছরের বিষ্ণুমায়া শর্মা। দুজনেই প্রার্থী হয়ে বেশ খুশি। বয়সের ব্যবধান ভুলে দুজনেই চাইছেন জেলা পরিষদের সদস্য হতে।
অমৃতার বাড়ি কুমারগ্রাম ব্লকের জয়ন্তী চা বাগানে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পর চা বাগানের শ্রমিকের কাজে যোগ দেন অমৃতা। ওই যুবতীর উপর ভরসা করেছে কংগ্রেস। এবিষয়ে অমৃতা বলেন, বাড়িতে দেখেছি রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হত। বাবা রাজনীতি করতেন। সেটা থেকেই ভালো লাগা।’ ইতিমধ্যেই ভোট প্রচারের স্ট্যাটার্জিও ঠিক করেছে অমৃতা। এলাকায় সবার বাড়ি গিয়ে প্রচার শুরু করবেন বলে জানালেন তিনি।
অন্যদিকে, মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের দলমোড় বস্তিতে বাড়ি বিষ্ণুমায়া শর্মার। অবসরপ্রাপ্ত ওই আইসিডিএস কর্মী বহু বছর ধরে আরএসপির সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করি অনেকদিন। মিটিং মিছিলে অনেক গিয়েছি। এই বয়সে এসে প্রথম ভোটে লড়া। দেখা যাক কতদূর কী হয়।’
জেলা পরিষদের ১১ নম্বর আসন থেকেও আরএসপির প্রার্থী ভূপেন্দ্রনাথ বর্মনেরও বয়স ৬৫ বছর। তবে বামেদের অন্য প্রার্থীদের বয়স তুলনামূলক অনেকটাই কম। ৩০ বছরের নীচে রয়েছেন তিনজন প্রার্থী। ৪০ এবং ৫০ বছরের কমেও রয়েছে তিনজন করে প্রার্থী। একই ছবি কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকাতেও। বিজেপির আবার সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী কল্পনা নাগ লড়ছেন জেলা পরিষদের ১ নম্বর আসন থেকে। ৪০ বছর এবং ৫০ বছর বয়সের বিজেপি প্রার্থী রয়েছেন যথাক্রমে ৬ ও ৯ জন। জেলা পরিষদ দখলের জন্য যুব ও মধ্যবয়স্কদের উপরই যে বেশি ভরসা গেরুয়া শিবিরের সেটা এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট।
তৃণমূলের ক্ষেত্রেও হিসেবটা একইরকম। জেলা পরিষদের প্রার্থীদের মধ্যে ৪০ বছরের কম বয়সের রয়েছেন ৬ জন এবং ৫০ বছরের কম বয়সি রয়েছেন ৭ জন। আবার ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সি রয়েছেন ৫ জন। তৃণমূল শিবিরের সব থেকে বেশি বয়সের প্রার্থী গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। জেলা পরিষদের ৬ নম্বর আসন থেকে লড়ছেন বছর ৫৫-এর এই পোড়খাওয়া নেতা। অন্যদিকে, জেলা পরিষদের ১ নম্বর আসনে কংগ্রেসের এবং বিজেপির সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থীদের সঙ্গে লড়বেন তৃণমূলের সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী বছর ত্রিশের নবনীতা নর্জিনারি।