রায়গঞ্জ: বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে শামিল দলেরই উপপ্রধান সহ অন্যান্য সদস্যরা। লোকসভা নির্বাচনের এহেন ঘটনায় কপালে ভাঁজ পড়েছে বিজেপি নেতৃত্বের। বুধবার বিকেলে রায়গঞ্জ ব্লকের ৬ নম্বর রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে প্রধান সহ অন্যান্য বিজেপি নেতৃত্বরা আন্দোলনরত উপপ্রধান ও সঞ্চালকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আগামীতে তাদের দাবি মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আশ্বাস দিলে পথ অবরোধ তুলে নেন।
বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ফুলমনি মার্ডি বলেন, আমাদের এলাকায় যে সমস্ত পথবাতি লাগানো হয়েছে খুবই নিম্নমানের। একটু রাত হলেই বাতিগুলো নিভে যায়। গ্রামবাসীরা আমাদের এসে চাপ সৃষ্টি করছে। প্রায় ৯৭ হাজার টাকা খরচ করে বাতিগুলো লাগানো হলেও আমরা কিছুই জানিনা। খুবই নিম্নমানের বাতিগুলো। বাজেট অনুযায়ী বাতিগুলো কেনা হয়নি। প্রধান আমাদের কিছুই জানায়না। নিজে নিজে সব কাজ করেন। ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়ায় গ্রামবাসীরা আমাদের চাপ দিচ্ছেন। তাই আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি। তবে দলের প্রতি ক্ষোভ নেই, ক্ষোভ আমাদের প্রধানের বিরুদ্ধে। প্রধান সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। প্রধান আমাদের দাবি দাওয়া না মেনে নিলে আন্দোলন চলবে।
বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ বর্মনের অভিযোগ, রাস্তার বাতিগুলো কেনা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। প্রধান দুই একজনকে সঙ্গে নিয়ে সব কাজ করছে। আমাদের সঙ্গে বিরোধী দলের সদস্যদের মতো আচরণ করছে। তাই আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হলাম। অন্যদিকে, স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা মলয় সরকার বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের উস্কানি দিয়ে কয়েকজনকে ভুল বুঝিয়ে এই আন্দোলন করিয়েছে। আমরা বসে সব ঠিকঠাক করে নেব। এতে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও লাভ হবে না। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি দীপঙ্কর বর্মনের কথায়, রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে যে দুর্নীতি চলছে তা তাদের দলের লোকজন বলছে। আমরা তো বলিনি। সাধারণ মানুষ এবার যোগ্য জবাব দেবে।
এদিকে দুর্নীতির ইস্যুকে ঘিরে নিজেদের জমি ফিরে পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সিপিএম। ইতিমধ্যে তারা পঞ্চায়েতগুলির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ডেপুটেশন কর্মসূচি নিয়েছে। সিপিএম নেতা প্রদ্যুৎ নারায়ণ ঘোষ বলেন, বিজেপি ও তৃণমূল দুটোই দুর্নীতিগ্রস্ত দল। তাই আগামী সপ্তাহে গ্রাম পঞ্চায়েত ঘেরাও করব। রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মমতা বর্মন রায়ের দাবি, আমরা সবাইকে জানিয়ে কাজের টেন্ডার করি। কিছু জানাই না ভুল কথা। বাতি কেনা নিয়েও কোনও দুর্নীতি হয়নি। জেলা থেকে এস্টিমেট আসার পর কাজ করেছি, নিজেরা করতে পারিনা। তিনি বলেন, ‘আমি ওদের মীমাংসা করার জন্য বসতে বলেছিলাম, কিন্তু তা সত্ত্বেও ওরা বসেনি। রাস্তা অবরোধ করে ভুল করেছে। সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছে। ওদের উদ্দ্যেশ্যে আসলে কি বুঝতে পারছি না।‘