রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: বাড়ানো হয়েছে টিকিটের দাম। কিন্তু পরিকাঠামো রয়ে গিয়েছে সেই মান্ধাতার আমলেরই। বেহাল শিলিগুড়ি পার্কের পরিষেবা নিয়ে তাই ব্যাপক ক্ষোভ সাধারণ মানুষের মধ্যে। বন দপ্তরের পরিচালনাধীন এই পার্কটি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ শহরবাসীর। পার্কে বাচ্চাদের খেলার সামগ্রীর যেমন দুরবস্থা, তেমনই মশার উৎপাত। সঠিক সময়ে ফোয়ারাটিও চালানো হয় না। বলতে গেলে উলটে ধমক খেতে হয় বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় বন দপ্তরের উদ্যান এবং কানন বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিএফও বিদ্যুৎনারায়ণ দাসের বক্তব্য, ‘আসলে পার্কটা অনেকটাই ছোট, তাই নতুন করে খেলার সামগ্রী বসানো যাচ্ছে না। তবে পুরোনোগুলি শীঘ্রই বদলে ফেলা হবে।’
শিলিগুড়ি পুরনিগমের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে এই পার্কটি রয়েছে। আশপাশের এলাকায় একটি মাত্র বড় পার্ক থাকায় অনেক অভিভাবকই বাচ্চাদের নিয়ে আসেন এই পার্কে। আগে পার্কের প্রবেশমূল্য ছিল ৫ টাকা এবং ১০ টাকা। ছয় বছর পর্যন্ত বাচ্চার বিনামূল্যে প্রবেশ। বছর দুয়েক আগে প্রবেশমূল্য ছয় বছরের ঊর্ধ্বে ১০ টাকা এবং বড়দের জন্য ২০ টাকা করা হয়। আগে পার্কে মাসে আয় হত ৪০ হাজার টাকার আশপাশে। জানা গিয়েছে, ফি বাড়ানোর পর সেই সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। এখন প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার মতো আয় হচ্ছে। কিন্তু এরপরেও পার্কে বাচ্চাদের খেলার সামগ্রী ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। খেলতে গেলে বাচ্চারা ব্যথা পাচ্ছে। কখনও আবার হাত-পা কাটছে। পার্কের সৌন্দর্যায়নের জন্যে একটি ফোয়ারা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ওই ফোয়ারাও চালানো হয় না বলে অভিযোগ। এখন নাকি ছয় বছর বয়সের নীচের বাচ্চাদেরও টিকিট কাটতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এদিনও পার্কে গিয়ে একই বিষয় দেখা গিয়েছে। একাধিক খেলার সামগ্রী ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিকেলের পর ফোয়ারাও চালানো হয়নি। কেন ফোয়ারা চালানো হয়নি, জানতে গেলে এক অভিভাবককে রীতিমতো তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ডাবগ্রামের বাসিন্দা সুপ্রিয়া সাহার বক্তব্য, ‘বেশিরভাগ দিনই ফোয়ারা চালানো হয় না। খেলার সামগ্রীগুলিরও খুব খারাপ অবস্থা। বাচ্চরা জেদ করে তাই নিয়ে আসতে হয়।’
নাতিকে নিয়ে এসেছিলেন সুদেব কর্মকার। তিনিও পার্কের অবস্থা দেখে হতাশ সুরে বললেন, ‘নাতি এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় জেদ করছিল। পার্কের কিছু পরিবর্তন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু যাদের জন্যে পার্ক, তাদের খেলাধুলোর সরঞ্জামের অবস্থা খুব খারাপ।’