শিলিগুড়ি: বিভিন্ন রকমের আলোর উপস্থিতিতে জৈব মলিকিউল বা অণু কীরকম আচরণ করে এবং সেগুলোর সক্রিয়তা কেমন হয় তা নিয়ে গবেষণা করে বিদেশে প্রশংসিত হলেন শিলিগুড়ির অরিজিৎ চক্রবর্তী। আইআইটি রোপার-এর এই গবেষকের গবেষণা প্রকাশ পেল আন্তর্জাতিক কেমিক্যাল জার্নাল প্রকাশিত ‘অর্গানিক লেটার্স’-এ। নতুন নতুন মলিকিউল নিয়ে কাজ করাই এখন যেন নেশা হয়ে উঠেছে অরিজিতের।
জৈব রসায়ন নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা বর্তমানে একটি আন্তর্জাতিক স্তরের আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক পণ্য, ওষুধ, বায়োকেমিস্ট্রি ও রাসায়নিক জীববিজ্ঞানে অভিনব সিন্থেটিক পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া ব্যবহার করে আইআইটি রোপার-এ গবেষণার কাজ করছেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অরিজিৎ। ফোটো রেডক্স পদ্ধতি অর্থাৎ লাইট ব্যবহার করে কেমিক্যাল প্রতিক্রিয়া কীভাবে হয় তা নিয়েই গবেষণার ব্যস্ত শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের এই প্রাক্তনী। নিজের এই কাজ নিয়ে অরিজিৎ বলেন, ‘এতদিন অনেক ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা হত। যা পরিবেশের জন্যও খুব একটা ভালো না। এবার ক্ষতিকারক কেমিক্যালের পরিবর্তে লাইট দিয়ে প্রতিক্রিয়া করা যায় কি না তা নিয়েই গবেষণা করছি।’
স্কুলজীবন থেকেই রসায়নের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে অরিজিতের। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে শিলিগুড়ি কলেজে রসায়নে অনার্স পড়ার সময় থেকেই আইআইটিতে পড়ার স্বপ্ন দেখেন এই মেধাবী গবেষক। ২০২১ সালে শিলিগুড়ি কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে আইআইটিতে স্নাতকোত্তরের জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা দেন তিনি। তবে কোনও কোচিং ইনস্টিটিউট ছাড়াই বই পড়ে ও বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ স্টাডি করেই আইআইটি ধানবাদে পড়াশোনা করার সুযোগ আসে। সেখান থেকে মাস্টার্স করে গবেষণার জন্য আইআইটি রোপার-এ যোগ দেন অরিজিৎ।
অরিজিতের বাবা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী ও মা অনামিকা চক্রবর্তী দুজনেই সংগীতচর্চার সঙ্গে যুক্ত। অরিজিৎ নিজেও অবসর সময় গানের মধ্যে কাটাতে ভালোবাসেন। ছেলের এই সাফল্যে বাবা-মা দুজনেই খুশি।