প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার: ট্রেনের গতি বাড়াতে অত্যাধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল (North Eastern Railway)। এই পদ্ধতির নাম অটোমেটিক ব্লক সিগন্যালিং সিস্টেম বা এবিএস (Automatic Block Signalling System)। প্রাথমিকভাবে কোচবিহার থেকে শামুকতলা স্টেশনের মাঝে এই স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যান্য ডিভিশনে এই পদ্ধতি চালু হয়ে গেলেও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) ডিভিশনে এই ব্যবস্থা এই প্রথম চালু হবে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
ট্রেনের গতি বাড়াতেই এর আগে দুটি স্টেশনের মাঝখানে ইন্টার মিডিয়েট ব্লক হাট (আইবিএইচ) সিস্টেম চালু করার কথা বলেছিল এনএফআর কর্তৃপক্ষ। এবার নতুন এই পদ্ধতিতে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশাবাদী রেলকর্তারা। এই বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হলেও এখনও টেন্ডার প্রক্রিয়া সহ অন্যান্য কাজ বাকি রয়েছে। তাই রেলকর্তারা এখনই মুখ খুলতে চাননি। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিসিএম অঙ্কিত গুপ্তা স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি। তবে চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন।
কী এই এবিএস? রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, অটোমেটিক ব্লক সিগন্যালিং ব্যবস্থায় এক-দুই কিলোমিটার ব্যবধানে সিগন্যাল থাকবে। তার ফলে সামনে কোনও ট্রেন রয়েছে কি না তা জানতে পারবেন পিছনের ট্রেনের চালক। সেই মতো নির্দেশিকা মেনে চলবে ট্রেন। দুটি ট্রেন যদি একই লাইনে থাকে, তবে বর্তমানে প্রথম ট্রেন একটি স্টেশন থেকে অপর স্টেশনে না পৌঁছানো পর্যন্ত দ্বিতীয় ট্রেনটি সেই স্টেশন থেকে যাত্রা করতে পারে না। অপেক্ষা করতে হয়। দুটি স্টেশনের মাঝে দূরত্ব বেশি হলে সেই অপেক্ষার সময় বাড়ে। তবে আধুনিক এবিএস চালু হলে সেই অপেক্ষা আর করতে হবে না। কোনও স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেনটি যাত্রা করার অল্প সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয় ট্রেনটি যাত্রা করতে পারবে। প্রথম ট্রেন পরবর্তী স্টেশনে পৌঁছানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। নির্ধারিত সময় ও দূরত্ব মেনে একই ট্র্যাকে দুটি ট্রেন থাকবে। পরবর্তী স্টেশনে পৌঁছানোর পর প্রথম ট্রেন স্টেশন না ছাড়া পর্যন্ত অবশ্য দ্বিতীয় ট্রেনটিকে অপেক্ষা করতেই হবে। আগের ট্রেন স্টেশন ছাড়লে পরের ট্রেন ঢুকবে।
এর আগে যে ইন্টার মিডিয়েট ব্লক হাট সিস্টেমের কথা বলা হয়েছিল, তাতেও এই সময় বাঁচাবার কথাই বলা ছিল। সেক্ষেত্রে রেল ট্র্যাকে দুটি স্টেশনের প্রায় মাঝখানে ট্রেন দাঁড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করা হয়। লুপ লাইনের আদলে সিঙ্গল লাইন থেকে একটি শাখা লাইন থাকে। দুটি স্টেশন থেকে মুখোমুখি দুটি ট্রেন যাত্রা করলে একটি ট্রেন সেই ইন্টার মিডিয়েট ব্লক হাট এলাকায় দাঁড়িয়ে থেকে অন্য ট্রেনকে যাওয়ার রাস্তা ছেড়ে দিতে পারে।
জঙ্গল রুটে আইবিএইচ পদ্ধতিতে ট্রেন চালাবার কথা ভাবছে রেল। আর মেইন লাইনে অটোমেটিক ব্লক সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা চলছে।