উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘আমার বাবাকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে চাই’, বাবার মৃত্যুর খবর শোনার পর সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নিহত বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজীমের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস। সেই সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান মুমতারিন ফেরদৌস।
শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুমতারিন ফেরদৌস বলেন, ‘আমার বাবাকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে চাই। বাবা কতটা কষ্ট পেয়েছে, তা তাঁকে দেখে বুঝতে চাই। একজন মানুষ মানুষকে এমনভাবে কী করে মারতে পারে? এভাবে আমার বাবাকে কেটে কেটে টুকরা করা হয়েছে, আমি জীবনেও ভুলতে পারব না।’
মুমতারিন ফেরদৌস বলেন, ‘ওপরে যদি আল্লাহ থাকেন, তাহলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস তিনি এর বিচার করবেন। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য অনেক দিন ধরেই তারা পরিকল্পনা করেছে। তারা সাজিয়ে–গুছিয়ে নিয়েই এ ধরনের বড় একটা অপরাধ ঘটিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যার নাম আসছে, তাকে বিদেশ থেকে নিয়ে আসতে হবে। কান টানলে মাথা আসবে, যদি তার ওপরের কেউ থেকে থাকে, তার নামটিও খতিয়ে দেখতে হবে প্রশাসনকে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তদন্ত করে বিষয়টি দেখুন, রাজনৈতিক–অরাজনৈতিক যেটাই হোক না কেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখুন।’
মুমতারিন ফেরদৌস তাঁর বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার বাবার কালীগঞ্জে এতটাই জনপ্রিয়তা ছিল, তার জনপ্রিয়তা দেখেই তাঁকে আটকানোর জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে অপপ্রচার চালানো হয় একসময়। পরবর্তী সময় এসব মামলা সব মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তার প্রমাণও আমাদের কাছে আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, “ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে। ধৈর্য ধরো, আমি সঙ্গে আছি।” তিনি আমাকে বলেছেন, “তুমি তোমার বাবার সন্ধান চেয়েছিলে, স্পেশাল ফোর্স পাঠিয়ে আমি তোমার বাবাকে খুঁজে দিয়েছি।”
নিহত সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের বাল্যবন্ধু গোলাম রসুল বলেন, বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি একটাই, যেকোনো মূল্যে যদি শাহীনকে যদি ধরে এনে আইনের আওতায় আনা যায়, তাহলে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তৃণমূল পর্যন্ত কারা জড়িত, সবকিছু বের হয়ে আসবে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম চিকিৎসার জন্য দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতের কলকাতায় যান। ২২ মে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হয় সিআইডি।