অনুপ মণ্ডল, বুনিয়াদপুর: পারিবারিক বিবাদের জেরে ছেলের হাতে খুন হলেন মা (Murder Case)। ঘটনাটি ঘটেছে বংশীহারী (Banshihari) থানার গৌরীপাড়া এলাকায়। মৃতার নাম সভিয়া রবিদাস (৫৮)। স্বামী পূর্ণ রবিদাস (৬০) পেশায় কৃষক। তাঁদের দুই ছেলে। বড় ছেলে মিঠুন রবিদাস (৩৫) বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। মিঠুনের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর এক বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী ভোটের আগে বাপের বাড়িতে গিয়েছেন। ছোট ছেলে সঞ্জয় পরিবার নিয়ে অন্যত্র থাকেন। মিঠুন পেশায় গাড়িচালক। বিভিন্ন নেশায় আসক্ত। নিজের ট্র্যাক্টর ছিল। কিন্তু কিস্তি শোধ না করায় এই ব্যবসা বিলুপ্তির পথে।
মৃতার দাদা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিঠুন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মাকে টাকার জন্য চাপ দিত। এনিয়ে প্রতিনিয়ত ঝামেলা করত। রবিবার রাতে চড়ক মেলা থেকে বাবা ও ছেলে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়িতে আসে। রাতে ছেলের সঙ্গে মায়ের বচসা হয়। বচসা চরম পর্যায়ে পৌঁছোলে লোহার রড বা শাবল দিয়ে মায়ের মাথায় আঘাত করে। এতেই মৃত্যু হয় সভিয়ার।
প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, বাড়ির সামনে নিমগাছের গোড়ায় এই ঘটনা ঘটায় মিঠুন। সেখানে অনেকটা রক্ত দেখা গিয়েছে। সম্ভবত সেখান থেকে মৃতদেহ বাড়ির সামনের বারান্দায় চৌকিতে শুইয়ে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। সোমবার সকালে ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকাবাসী বাড়ির সামনে জড়ো হন। খবর যায় বংশীহারী থানায় (Banshihari Police Station)। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে একটি লোহার শাবল ও মাটি মিশ্রিত রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সেখান থেকেই পুলিশ মিঠুনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। যদিও পুলিশ আসার আগেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান পূর্ণ রবিদাস। তাতেই সন্দেহ, এই ঘটনায় তাঁরও হাত রয়েছে।
মৃতার দাদা লক্ষ্মণ রবিদাসের অভিযোগ, ‘বোন জামাই ও ভাগ্নেরা দীর্ঘদিন থেকে নেশার টাকা না পেলেই বোনের ওপর অত্যাচার ও মারধর করত। রবিবার রাতে যা চরম আকার নেয়। আমি বোন জামাই ও দুই ভাগ্নের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাব। দোষীরা যেন কঠোর শাস্তি পায়।’
বংশীহারী থানার আইসি অসীম গোপ বলেন, ‘আজ সকালে গৌরীপাড়া এলাকা থেকে এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে শাবল সহ মাটি মিশ্রিত রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ছেলে মিঠুন রবিদাসকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ বালুরঘাটে পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’