দুর্গাপুরঃ এক বৃদ্ধার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হল পশ্চিম বর্ধমান জেলার ইস্পাত নগরী দুর্গাপুরে। মৃতার নাম অনিমা রায়(৭০)। বাড়ি দুর্গাপুরের বেনাচিতি এলাকার দেবীনগরে। অভিযোগ, মৃত বৃদ্ধা নিজের পুত্রবধূর সঙ্গে এক মহিলার সমকামি সম্পর্ক মেনে নিতে না পারার কারণেই তাকে খুন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বৃদ্ধার সম্পত্তি হাতানোরও অভিযোগও এনেছে মৃত বৃদ্ধার পরিবার। বৃদ্ধা মৃত্যুর ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বৌমা সুনন্দা রায় ও তাঁর বান্ধবী পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার অমৃতা সামন্ত, সুনন্দার ভাই অনিমেষ তা ও বাবা জয়দেব তা’য়ের। পুলিশ লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সুনন্দা রায় সহ দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। শুক্রবার সকালে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল অনিমা রায়ের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। সব মিলিয়ে এক রোমহর্ষক ঘটনার সাক্ষী রইল শিল্পশহর দুর্গাপুর।
জানা গেছে, বছর দুয়েক আগে থেকে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার অমৃতা সামন্তর সঙ্গে পরিচয়ের মধ্যে দিয়ে একটা সম্পর্কের সুত্রপাত হয় গৃহবধু সুনন্দা রায়ের। এই সম্পর্কে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল সুনন্দার স্বামী প্রশান্ত রায় ও শাশুড়ি অনিমা রায়ের। এর পাশাপাশি দুর্গাপুরের বেনাচিতির দেবীনগরে যে বাড়িতে রায় পরিবার বাস করতেন, সেই বাড়িটির উপরেও নজর ছিল এই অমৃতা সামন্তর বলে অভিযোগ। এই বিষয়টি নিয়ে গত দুই-আড়াই বছর ধরে অশান্তি চলছিল অমৃতা রায় পরিবারে। সেই অশান্তি চরমে উঠে গত ২৯ অক্টোবর। বেনাচিতির দেবী নগরের বাড়িতে বৃদ্ধা অনিমা রায়কে ব্যপক মারধর করার অভিযোগ ওঠে সুনন্দা রায়, অমৃতা সামন্ত, অনিমেষ তা ও জয়দেব তা ‘র বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে বৃদ্ধাকে বিধাননগরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার ৯ নভেম্বর বিকেলে মৃত্যু হয় অনিমা রায়ের।
এই মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরূদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতার দুই ছেলে শ্রীকান্ত রায় ও প্রশান্ত রায়। তারা এদিন বলেন, সুনন্দার সঙ্গে ঐ সিভিক ভলান্টিয়ারের সমকামিতার সম্পর্ক আমরা মেনে নিতে পারিনি। তবে তার পরিণতি যে এমনটা হবে, তা ভাবিনি। এই ঘটনা নিয়ে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (দুর্গাপুর) তথাগত পান্ডে এদিন বলেন, বৃদ্ধার মৃত্যুতে তার পরিবারের তরফে একটা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দুজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।