রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: নয় বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এক মাসে ১ কোটিরও বেশি টাকা আয় করেছে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি কর্তৃপক্ষ (Bengal Safari)। তবে শুধু আয়ের ক্ষেত্রেই নয়, পর্যটকের (Tourists) সংখ্যার বিচারেও রেকর্ড করেছে বেঙ্গল সাফারি। গত মাসে সাফারি পার্কে ৬২ হাজার ৫২০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। যা সাফারির ইতিহাসে প্রথম বলেই জানিয়েছেন বনকর্তারা। নতুন পশুর আগমন, পার্কে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার গেমসের উদ্বোধন সহ একাধিক পদক্ষেপের কারণে এত মানুষ এসেছেন বলে তাঁরা মনে করছেন। রাজ্য জু অথরিটির সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘এই প্রথম সাফারি পার্কে এক মাসে এত টাকা আয় হয়েছে। এটা সকলের সহযোগিতায় সম্ভব হয়েছে।’
বছর নয়েক আগে শিলিগুড়ির (Siliguri) বেঙ্গল সাফারি পার্কের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। এরপর থেকে এই পার্কে ধাপে ধাপে একাধিক পশু-পাখি নিয়ে আসা হয়েছে। প্রথম দিকে লেপার্ড, হাতি, ময়ূর, ফিশিং ক্যাট থাকলেও পরবর্তীতে দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়ে আসা হয়। এই দুটি বাঘের সখ্য এবং মিলনের পর সাফারি পার্কে ধীরে ধীরে রয়েল বেঙ্গলের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এরপর বাঘ দেখতেই সাফারি পার্কে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে। এই বাঘগুলির মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ ছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগার শীলার প্রথম সন্তান সাদা বাঘ কিকা। শীলাই সাফারি পার্কে তিনবার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন শীলার ১১ জনের ভরা সংসার। এসবের মাঝেই দুটি হিমালয়ান ব্ল্যাক বিয়ার আনা হয়। জেনিফার এবং ফূর্বু নামের এই দুটি ভালুক দেখতেও পর্যটকরা ভিড় জমান এখানে।
প্রতি বছরই নিজের আয়ের রেকর্ড ভাঙছিল উত্তরবঙ্গের এই পার্ক। কিন্তু মাঝে কিছু হরিণ এবং বাঘের শাবকের মৃত্যু সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের ভূমিকাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। বিষয়গুলি বারবার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে বন দপ্তর। দপ্তরের তরফে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। সেখান থেকে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে চাঙ্গা হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে সাফারিতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সেই সংখ্যা বাড়ে অনেকটাই। জানুয়ারিতে ম্যানড্রিল, উল্লুকের মতো প্রাণীও আনা হয়। যার ফলে শুধু গত মাসেই ১ কোটি ১০ লক্ষ ৫২ হাজার ৯২০ টাকা আয় হয়েছে বলে পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।