সানি সরকার, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি আদালত চত্বরে প্রচার সেরে গাড়িতে ওঠার আগে গলা ভিজিয়ে নিলেন দার্জিলিং (Darjeeling) লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্ট। রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম মুছে আকাশের দিকে তাকালেন একবার। আকাশে তখন ঘনঘটা। মেঘ-রোদের লুকোচুরি চলছে অনবরত (Weather Report)। আর তাতেই গুমোট আবহাওয়ায় কিছুটা হলেও ঘাম ঝরছে সকলের।
দিনের শেষে আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য বলছে, সোমবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। দহন জ্বালায় যখন জ্বলছে দক্ষিণবঙ্গ থেকে গৌড়বঙ্গ, তখন শিলিগুড়ির (Siliguri) এই তাপমাত্রা দেখে সেখানকার মানুষ নিঃসন্দেহে যে ঈর্ষা করবেন, তা নিয়ে সংশয় নেই। তবে এই পরিস্থিতি যে সাময়িক, সেই বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। বুধবার থেকে প্রাথমিকভাবে তিনদিনের জন্য গৌড়বঙ্গের ক্ষেত্রে তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে। মালদার পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড অতিক্রম করে যেতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের তরফে। ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি ভোট রয়েছে রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাট কেন্দ্রে।
আবহাওয়ার মতিগতির পরিবর্তন ভাবাচ্ছে নির্বাচন কমিশনকেও। তাই সোমবার আবহাওয়া দপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র সহ সংশিষ্ট কয়েকটি দপ্তরের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের নেতৃত্বাধীন ফুল বেঞ্চ। পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে সমস্ত ব্যবস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার।
তাপমাত্রা যদি ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পৌঁছে যায় এবং তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ ডিগ্রি বেশি থাকে, তবে তা তাপপ্রবাহ বা হিটওয়েভ হিসেবে ধরা হয়। পাহাড়ের ক্ষেত্রে ৪০-এর পরিবর্তে ৩০ ডিগ্রি ধরা হয়। এবারে আবহাওয়ার যা মতিগতি তাতে, গৌড়বঙ্গে তাপপ্রবাহ নিয়ে চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে।
গৌড়বঙ্গের পাশাপাশি বুধবার থেকে উত্তরবঙ্গের বাকি পাঁচ জেলাতেও তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা। জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের মতো জায়গাগুলিতে তাপমাত্রা চরচর করে বৃদ্ধি পেলেও শিলিগুড়ির এদিনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকার কারণ পাহাড়ে বৃষ্টিপাত। সিকিমের পাশাপাশি দার্জিলিং পাহাড়েও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে কিছুটা হলেও সন্ধের পর ঠান্ডা হাওয়া ঢুকছে শহর শিলিগুড়িতেও। কিন্তু কতদিন স্বস্তি মিলবে তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।