রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ ফরেস্ট ডিভিশনের কুলিক পক্ষীনিবাসে শনিবার থেকে শুরু হল পাখি গণনার কাজ। রবিবার পর্যন্ত এই গণনা চলবে। এদিন সকাল ৭টা থেকে পাখি গণনা শুরু হয়। পশু ও পাখিপ্রেমী সংস্থার পাশাপাশি প্রকৃতিপ্রেমী সংস্থার সদস্যরা বনবিভাগের কর্মীদের সঙ্গে গণনার কাজে অংশ নেন। গত দুই বছর করোনার কারণে রেকর্ড সংখ্যক পাখি এসেছিল পাখিরালয়ে।
রায়গঞ্জ ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারির কুলিক পক্ষীনিবাসে পাখি গণনার কাজে অংশ নিয়েছে প্রায় ১০টির বেশি সংগঠন। গণনার কাজে উৎসাহ দিতে তাদের পাশে ছিলেন রেঞ্জার প্রমিকা লামা ও অন্যান্য কর্মীরা। রেঞ্জার প্রমিকা লামা জানান, দু’দিন পাখি গণনা চলবে। আশা করা হচ্ছে, এবার পাখির সংখ্যা বাড়বে। এবছর এগরেট, কর্মোরেন্ট পাখির সংখ্যা ভালোই আছে।
কুলিক পখিরালয় এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম। এখানে ওপেন বিল স্টক, নাইট হেরন, কর্মোরেন্ট, এগরেটের মতো পরিযায়ী পাখিরা মূলত প্রজননের সময় ভিন দেশ থেকে উড়ে এসে বাসা বানায়। বাচ্চা পাখিগুলি উড়তে শিখে গেলে পরিযায়ীর দল আবারও উড়ে চলে যায় দূরদেশে। এবছর এগরেট পাখির দল মে মাসের শুরুতেই আসতে শুরু করে। সাদা হয়ে যায় কুলিকের সবুজ অরণ্য। মরশুমের শুরুতেই এভাবে পরিযায়ী পাখি ও পর্যটকের ভিড় বাড়তে থাকায় সব রেকর্ড ভেঙে যাবে বলে আশাবাদী প্রমিকা লামা।
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছিল। সে বছর ৯৮,৫৬২টি পাখি কুলিক পক্ষীনিবাসে এসেছিল। যদিও গত বছর ২০১৯ সালে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কিছুটা কমে গিয়ে হয় ৯৩,০৮৮টি। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা আবহ থাকায় পাখিপ্রেমীরা ভেবেছিল পরিযায়ীদের ওপর বড় প্রভাব পড়বে। কিন্ত তার উলটোচিত্র দেখা যায়। ২০২০ সালে ৯৯,৬৩১ এবং ২০২১ সালে ৯৮,৭৩৯ পাখি পাখিরালয়ে এসেছিল। ২০২২ সালে এসেছিল ৯৯, ৩৯৩টি পাখি।
পশুপ্রেমী সংস্থার কর্নধার অজয় সাহা জানান, কুলিক পক্ষীনিবাস রায়গঞ্জ তথা জেলা ও পশ্চিমবঙ্গের গর্ব। এই পক্ষীনিবাসকে রক্ষা করার জন্য সমস্ত জলাশয়কে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। অবৈধভাবে পুকুর বুজিয়ে ফেলা বন্ধ করার পাশাপাশি নদী দূষণ রোধ করতে হবে। কুলিক নদীর ধারে অবৈধভাবে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে ধান চাষ বন্ধ করতে হবে। কুলিক নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তিনি।